রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের ওপর ছিনতাইকারীদের হাতে হাফেজ কামরুল হাসান (২৩) নিহতের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় দুই পেশাদার ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে যাত্রাবাড়ীর করাতিটোলা এলাকা থেকে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার দুজন হলেন- শাকিল (১৬) ও আশরাফুল ইসলাম (১৭)।
পুলিশ জানায়, গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে কামরুল হাসান বাস থেকে যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের সায়েদাবাদ এলাকায় নেমে সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার জন্য ফ্লাইওভার দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এসময় কয়েকজন ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে এবং দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার কাছে থাকা নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিতে চায়। এতে বাঁধা দিলে চাকু দিয়ে তার বুকে আঘাত করে। কামরুল হাসান ফ্লাইওভারের কামরুলের বুকে আঘাত করে ছিনতাইকারী। পরবর্তীতে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
শনিবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. মফিজুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে মফিজুল ইসলাম বলেন, গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে হাফেজ কামরুল হাসান তার বন্ধুদের সঙ্গে সাজেক যাওয়ার জন্য রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড হতে সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডের উদ্দেশে রওনা করেন। রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের সায়েদাবাদ এলাকায় নেমে সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার জন্য ফ্লাইওভার দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এসময় কয়েকজন ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে। ছিনতাইকারীরা দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার কাছে থাকা নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিতে চায়। ভিকটিম কামরুল হাসান ছিনতাইকারীদের বাঁধা দেওয়ায় তাদের সঙ্গে কামরুল হাসানের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছিনতাইকারী রোহান তার হাতে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে তার বুকে আঘাত করে। কামরুল হাসান ফ্লাইওভারের ওপর লুটিয়ে পড়লে ছিনতাইকারীরা তার কাছে থাকা একটি মোবাইল ফোন যার আনুমানিক মূল্য ১১ হাজার টাকা ও নগদ ৭ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে গুরুতর আহত অবস্থায় কামরুল হাসানকে উদ্ধার করে ইসলামিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গতকাল কামরুল হাসানের বাবা মো. ইমাম হোসেন বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আজ সকালে শাকিল ও আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এডিসি মফিজুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছেন। এছাড়া তারা হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া ছিনতাইকারী চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন