ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন মাহমুদকে মারধর, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণি আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম সাইফুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে এক হাজার টাকা মুচলেকায় মঞ্জুর করেন।
এর আগে নাছির উদ্দিন মাহমুদকে মারধর, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর সত্যতা পেয়ে গত ১৮ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ঢাকা জেলার পিবিআই পরিদর্শক মো. মনির হোসেন অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে পরীমণিসহ জুনায়েদ বোগদাদী জিমিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ মেলেনি। পরে গত ১৮ এপ্রিল আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে পরীমণিকে হাজির হতে সমন জারি করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে পিবিআই উল্লেখ করে, ২০২১ সালের ৮ জুন রাতে আসামি পরীমণি অসৎ উদ্দেশে বাদী নাছির মাহমুদকে ফাঁদে ফেলে সুসম্পর্ক সৃষ্টি করে ঢাকা বোট ক্লাবের নিয়ম উপেক্ষা করে ফ্রিতে তিন লিটারের ব্লু লেবেল মদ পার্সেল নিতে না পেরে বাদীর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকি প্রদান করেন। পরীমণি ইচ্ছাপূর্বকভাবে বাদীর দিকে এসট্রে ছুড়ে মেরে তার ডান কানের উপরে মাথায় আঘাত করে জখম করেন। এ ছাড়া আসামিদের ছোড়া ভাঙা গ্লাসের টুকরায় বাদীর বুকে লাল চিহ্নিত স্ক্র্যাচ মার্ক যুক্ত জখম করে ও ক্লাবের বারের ভিতরে যত্রতত্র গ্লাস, কাচের বোতল এসট্রে ইত্যাদি ছুড়ে ফেলে তাণ্ডব করে। যার ফলে আসামি পরিমণির বিরুদ্ধে বাদীর আনা ৩২৩/৫০৬ ধারার অপরাধ করেছে মর্মে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বারের ভিতরে তাণ্ডব করতে থাকলে সাক্ষী তুহিন সিদ্দিকীকে বাদী নাছির আসামিদের নিয়ে বার থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। তখন আসামি জুনায়েদ বোগদাদী জিমি তেড়ে গিয়ে বাদী নাছির মাহমুদকে গালমন্দ করতে করতে এবং হুমকি প্রদর্শন পূর্বক ২-৩টা কিল-ঘুষি মারেন। এতে আসামি জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধে বাদিনীর আনা অভিযোগ মতে ৩২৩/৫০৬ ধারার অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি ঘটনার সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তার বিরুদ্ধে বাদীর আনা কোনো অভিযোগের সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে মামলার বাদী নাছির উদ্দিন মাহমুদ কালবেলাকে বলেন, পরীমণি মিথ্যা নাটক সাজিয়ে ছিল। পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে সেই রহস্য উন্মোচন হয়েছে। আমি সব সময় ন্যায় বিচার চেয়েছি, এখনো আমি ন্যায় বিচার চাই।
এর আগে ২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে মামলাটি করেন ঢাকার সাভারের বোট ক্লাবের পরিচালক নাসির উদ্দিন মাহমুদ। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে একই বছরের ১৮ জুলাই এ মামলাটি গ্রহণ করে আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মন্তব্য করুন