রাজধানীর পল্টন ও রমনা মডেল থানার পৃথক ৯ মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের গ্রেপ্তার দেখানো নিয়ে লুকোচুরির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে আদালত চলাকালীন গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করা হয়। পরে জামিন শুনানি করতে গেলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি বলে জানানো হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, মির্জা আব্বাসের উপস্থিতিতে দুটি আদালতে তার ৯ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত তার গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। দুপুরে জামিনের শুনানি করতে গেলে আদালত বলেন, আপনাদের মামলা সিডব্লিউ হয়ে এখনো আসেনি। যেহেতু সিডব্লিউ আদেশ ও নথি পাওয়া যাচ্ছে না, সে হিসেবে জামিন শুনানি হবে না। কিন্তু নথি আদালতে ছিল।
এদিন সকালে কারাগার থেকে মির্জা আব্বাসকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত চলাকালীন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী পল্টন থানার পাঁচ মামলায় এবং ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুলতান সোহাগ উদ্দিন রমনা মডেল থানার চার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে মির্জা আব্বাসের জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালতে দুপুরে জামিন শুনানি করতে গেলে বলা হয় এসব মামলায় এখনো মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।
আদালতের রমনা মডেল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপপরিদর্শক নিজাম উদ্দিন ফকির বলেন, মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে আমরা কোন আদেশ পায়নি। মির্জা আব্বাসের উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।
আদালতের পল্টন থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আলমগীর বলেন, স্যার (ম্যাজিস্ট্রেট) অসুস্থ তাই বাসায় চলে গেছেন। নথি স্যারের কাছেই আছে। মির্জা আব্বাসের উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কিছু বলত পারব না। স্যারের কাছে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আমি কিছু জানি না।
জামিন শুনানিতে উপস্থিত আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সিএমএম আদালতের প্রশাসনিক গড়িমসির কারণে নথি উপস্থাপিত না হওয়ায় জামিন শুনানি হয়নি। যা ন্যায়বিচারের পথকে বাধাগ্রস্ত করেছে। জামিন দেওয়া, না দেওয়া এখতিয়ার আদালতের। কিন্তু জামিন শুনানির অধিকার আসামির, সেই অধিকার বারবার ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।
গত বছরের ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা হয়। এর মধ্যে পল্টন থানার পুলিশ কনস্টেবল হত্যাসহ পাঁচ মামলা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলাসহ চার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। শাহজাহানপুর থানার নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৩১ অক্টোবর রাতে ঢাকার শহীদবাগ থেকে মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে এ মামলায় গত ১ নভেম্বর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ৫ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা রেওলয়ে থানার আরেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মন্তব্য করুন