চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এ এস মোসার সঙ্গে উচ্চ স্বরে তর্কে জড়ানোয় ফারুক হোসেন মিয়াজী নামের এক আইনজীবীকে স্টুপিড বলে তাকে তাৎক্ষণিক এরেস্টের নির্দেশ দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে এডিএমকে ঘুষখোর এবং তার কার্যালয়ের কতিপয় কর্মচারী ঘুষ ছাড়া কাজ করেন না বলে অভিযোগ করেন ওই আইনজীবী।
সোমবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে আদালত চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। তবে এই ব্যাপারে এডিএমের ব্যবহারের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জেলা আইনজীবী সমিতি।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের সিনিয়র আইনজীবী জসিম উদ্দিন ভুঁইয়া মিঠু বলেন, এডিএম কোর্টে আইনজীবী ফারুক হোসেন মিয়াজী একটি মামলার শুনানিতে উপস্থিত হন। এর আগে ওই মামলাটি এডিএম নিজেই তদন্ত করার জন্য সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হেদায়েত উল্যাহকে দায়িত্ব দেন। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী এসিল্যান্ড মামলা তদন্ত করে বিবদমান সম্পত্তি প্রতিপক্ষের দখলে আছেন মর্মে এডিএম কোর্টে রিপোর্ট দেন। আইনজীবী ফারুক মিয়াজী ওই প্রতিবেদন রিপোর্টের কপি হাতে পান এবং রিপোর্ট গ্রহণের বিষয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে এডিএম বলেন, এই রিপোর্ট গ্রহণ করা যাবে না। উত্তরে আইনজীবী ফারুক মিয়াজী বলেন, কেন গ্রহণ করা যাবে না। আপনি নিজেই তো এসিল্যান্ডকে দায়িত্ব দিয়েছেন তদন্ত করার জন্য। তখন এডিএম এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তাৎক্ষণিক কোর্ট পুলিশকে ওই আইনজীবীকে অ্যারেস্ট করার জন্য বলেন এবং স্টুপিড বলেও সম্বোধন করেন। এই ধরনের আচরণ কোন এডিএমের কাছ থেকে কোনভাবে কাম্য নয়।
চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এজেডএম রফিকুল হাসান রিপন জানান, আইনজীবী ফারুক হোসেনের সঙ্গে এডিএমের অসদাচরণ করার বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমরা নিয়মানুসারে সভাপতিসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাৎক্ষণিক আদালত বর্জন করি এবং এই বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য জেলা আইনজীবী সমিতিতে জরুরি সাধারণ সভা ডেকেছি।
এদিকে কোর্ট চত্বরে আইনজীবীদের কেউ কেউ বলছিলেন এডিএমকে ঘুষখোর বলায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওই আইনজীবীকে স্টুপিড বলে এরেস্টের নির্দেশ দেন। যদিও উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অন্য আইনজীবীরা এগিয়ে আসেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এ এস মোসা কালবেলাকে বলেন, আইনজীবীই আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। কী ধরনের অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তা আমি সুপ্রিম কোর্ট বার কাউন্সিলে লিখিত আকারে জানাব এবং সেখানেই তা উল্লেখ করব।
বিষয়টি নিয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, আমি বাইরে ছিলাম। বিষয়টি এই মাত্রই শুনলাম। আমি খোঁজ খবর নিয়ে পরবর্তীতে আপনাদের বক্তব্য দেব।
মন্তব্য করুন