আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় অনলাইন জুয়া বন্ধে এবার পদক্ষেপ নিলেন উচ্চ আদালত। এক রিটের ভিত্তিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছেন হাইকোর্ট।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোন কোন তারকা জুয়ার সাইটের বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন এবং তা বন্ধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নিষিদ্ধ হলেও মাদকের মতোই প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইন জুয়া। গত বছরের জুনে দেওয়া আইসিটি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, অনলাইন জুয়ায় অংশ নেয় প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। জুয়ার প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে তারকা খেলোয়াড়, নায়ক-নায়িকা, মডেলদের দিয়ে করানো হয় বেটিং সাইটের বিজ্ঞাপন।
এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিটের শুনানি হয় বিচারপতি ফাতেমা নজিব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর দ্বৈত বেঞ্চে। পরে স্বরাষ্ট্র, সংস্কৃতি ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইজিপি, বিটিআরসি চেয়ারম্যানসহ সাতজন নিয়ে কমিটি গঠন করেন আদালত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কেন নিষ্ক্রিয়, তা নিয়ে রুলও জারি করা হয়।
রিটকারীর আইনজীবী মাহিন এম রহমান বলেন, ‘একটি বিশেষায়িত কমিটি গঠন করে তারা একটি তদন্ত করবে। এরপর কারা কারা এটাতে যুক্ত, চিহ্নিত করে, এটাকে কীভাবে নিষ্ক্রিয় করা যায়, ইভেক্টিভলি সেটার একটি তদন্ত রিপোর্ট ৯০ দিনের মধ্যে কোর্টে সাবমিট করতে একটি অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়েছেন।’
অনলাইন জুয়ার বেশির ভাগই হয় মুঠোফোনে। আইনজীবীরা জানান, সর্বস্ব হারিয়ে আত্মহত্যা করেছে অনেকে। পাচার হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ওমর ফারুক বলেন, ‘গ্রামের ছেলেপেলেরা ১৪ কি ১৫ বছর বয়স, তারাও ফোন নিয়ে ৮ থেকে ১০ জন বসে এই গেম খেলছে। বিভিন্ন ক্যাটাগরির গেম আছে। যেসব নায়ক-নায়িকাকে বিজ্ঞাপনের জন্য নেওয়া হয়, তাদের যদি দণ্ডবিধির মধ্যে আনতে হবে। তারা বাজে কাজে উৎসাহ দিয়েছে, এটা অপরাধও বটে।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হুমায়ুন কবির পল্লব বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায়, মোড়ে মোড়ে গ্রামগঞ্জে ব্যাপক হারে জুয়া খেলা হলেও আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এ ধরনের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।’
পাবলিক গ্যাম্বলিং অ্যাক্ট ১৮৬৭ অনুযায়ী জুয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ। সংবিধানের ১৮ অনুচ্ছেদেও গণিকাবৃত্তি ও জুয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের কার্যকর ব্যবস্থার নির্দেশ রয়েছে।
মন্তব্য করুন