নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত আদালতে বলেছেন, ‘আমি ছাত্রলীগ করি এবং আমি গর্ব করি। আমাদের ভালো দিন আসবে।’
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০ টার দিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিএম ফারহান ইশতিয়াকের আদালতে রিমান্ড শুনানির জন্য তোলা হয়। এরপর শুনানি শেষে তাকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানি শেষে হাজতখানায় নিয়ে যাবার সময় সৈকত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশকে সোনার বাংলার পরিবর্তে বাকশাল তৈরি করা হচ্ছে। আজকে বাংলাদেশকে যারা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন করেছে, তাদের বেশি অপমান করা হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ সামনে আমাদের ভালো দিন আসবে৷ জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।'
আদালতের কি বক্তব্য দিলেন জানতে চাইলে সৈকত বলেন, ‘আমি ছাত্রলীগ করি এবং আমি গর্ব করি। যতদিন ছাত্রলীগের রক্ত ও আওয়ামী রক্ত স্বাধীনতার পক্ষে থাকবে, ততদিন ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের বলবো, ছাত্রলীগ ভয় করে না কখনো। যারা এদেশের সোনালি অর্জন তারা ছাত্রলীগের হাত ধরে এসেছে। এদেশের বায়ান্ন ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জেগে উঠবে ইনশাআল্লাহ। শেখ হাসিনা এদেশের মানুষকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতো। শেখ হাসিনাই এদেশের মানুষের দায়িত্ব নিবে ইনশাআল্লাহ।’
এদিকে আদালতে সৈকত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো হত্যাকাণ্ড হয়নি দাবি করেন। এ বিষয়ে তার কাছে প্রশ্ন করা হলে সৈকত বলেন, ‘হ্যাঁ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো হত্যাকাণ্ড হয়নি। এটার এখনো কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। বর্তমানে কোন আইনের শাসন নেই।’
এদিকে শুনানি চলাকালে সৈকত আদালতে বলেন, ‘ছাত্রলীগ খুনি দল না। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম, আছি। আমি ছাত্রলীগের গর্বিত কর্মী। আমি ছাত্রলীগে থাকা অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটিও হত্যাকাণ্ড হয়নি ’
এরপরেই এজলাস কক্ষ উত্তপ্ত হয়ে যায়। আইনজীবীরা তাকে সন্ত্রাসী, খুনি বলে চিৎকার করে থামতে বলেন। তবুও কর্ণপাত করেন নি সৈকত। শাজাহান খান তাকে কথা চালিয়ে যেতে বলেন।
তখন সৈকত আবার বলেন, ‘ছাত্রলীগ খুনি দল না। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই,’ বলতে গেলে আবার হট্টগোল দেখা যায়। তখন তাকে থামতে বলা হয়। এসময় শাজাহান খান আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, একজন বন্দী কথা বলতে গেলে আইনজীবীরা যদি এভাবে থ্রেট করেন, এর বিচার আপনাকেই করতে হবে। একজন বন্দী কি কথা বলতে পারবে না?’
এসময় সৈকত বলেন, ‘আমি আইনের প্রতি বিশ্বাসী। আমি কি কথা বলতে পারবো নাহ?’ এসময় পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘আপনাদের কথা বলার অনেক সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু আদালতের পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আসামিদেরও দায়িত্ব রয়েছে। এমন কোনো কথা বলবেন না যেন আদালতের পরিবেশ নষ্ট হয়।’ এরপর শুনানি শেষে সৈকতকে দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১৪ আগস্ট রাতে তানভীর হাসান সৈকত রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন।
মন্তব্য করুন