আলোচিত মডেল মেঘনা আলমের সহযোগী কাওয়াই প্রতিষ্ঠানের সিইও ও সানজানা ম্যান পাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. দেওয়ান সমির বলেছেন, ‘মেঘনার একমাত্র পুরুষ রাষ্ট্রদূত (সৌদি)। আমি তার বয়ফ্রেন্ড না।’
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় করা প্রতারণার মামলায় সমিরকে ফের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এমএ আজহারুল ইসলাম।
শুনানি শেষে সমিরকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার সময় মেঘনা তার গার্লফ্রেন্ড কিনা জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিককে বলেন, ‘না না। মেঘনা নিজেই আদালতে বলেছে, তার একমাত্র পুরুষ রাষ্ট্রদূত। যার সঙ্গে তার সম্পর্ক। আমি তার বয়ফ্রেন্ড না। সে আমার গার্লফ্রেন্ড না।’
এ সময় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আপনার পরিচয় আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না না। আমি রাষ্ট্রদূতকে চিনি না জানি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি নির্দোষ। আমি সঠিক বিচার চাই। রাষ্ট্রদূতকে আনা হোক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজিকে আনা হোক। মেঘনাকে আনা হোক।’
সমির বলেন, ‘আমি নির্দোষ। আমি এ মামলার সঙ্গে জড়িত না। আমার সঙ্গে মেঘনা আলমের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা। আমি জাপানে ছিলাম। আপনারা ধৈর্য ধরুন। সঠিক ফল আসবে। আমি যদি জড়িত হই, সরকার যে শাস্তি দিবে আমি মাথা পেতে নিব।’
এদিন সমিরকে একই মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মোরশেদ আলম তাকে ফের ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল মেঘনা আলম আদালতে বলেন, ‘আমাকে বিনা বিচারে জেলে পাঠানো হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে কোনো আইনজীবী পাবেন না। বিষয়টি হচ্ছে রাষ্ট্রদূত ঈসার সঙ্গে আমার একমাত্র সম্পর্ক, আর কারও সঙ্গে না।’
তিনি দাবি করে বলেন, ‘সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। ঈসা অভিযোগ করেন, আমি নাকি তার বাচ্চা নষ্ট করে ফেলেছি। এটা মোটেও সত্য না। এ বিষয়ে আমি ঈসার সঙ্গে কথা বলি। তাকে এসব তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলি। এসব বিষয় নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি শফিকুরের সঙ্গে কথা বলি। এরপরই পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে।’
এর আগে গত ১২ এপ্রিল মডেল মেঘনা আলমের সহযোগী মো. দেওয়ান সমিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তবে ৩ দিনের রিমান্ড শেষ হলে পুনরায় তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
এজাহার থেকে জানা গেছে, মেঘনা আলম, দেওয়ান সমিরসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিক বা প্রতিনিধি ও দেশীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করিয়ে কৌশলে বিভিন্ন উপায়ে অবৈধ পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে, তাদের সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আসছে।
দেওয়ান সমির কাওয়ালি গ্রুপ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং সানজানা ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের ফার্মের মালিক বলে জানা যায়। এ ছাড়া এর আগে মিরআই ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। বিভিন্ন আকর্ষণীয় ও স্মার্ট মেয়েদের তার প্রতিষ্ঠানে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিয়োগ দিয়ে বিদেশি কূটনীতিক ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের কাছে সহজে যাতায়াত নিশ্চিত করা এবং দেওয়ান সমির তার ম্যানপাওয়ার ও অন্যান্য ব্যবসাকে অধিকতর লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করানোর লক্ষ্যে, চক্রান্তের অংশ হিসেবে অসৎ উদ্দেশ্যে তার সহযোগী আসামিদের সহায়তায় ও অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কূটনীতিককে টার্গেট করে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা চাঁদা হিসেবে দাবি করে আদায় করে থাকে।
এর আগে গত ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ বিজয়ী মডেল মেঘনা আলমকে ডিটেনশন আইনে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে মডেল মেঘনাকে আদালতে হাজির করে আটক রাখার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। পরে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
মন্তব্য করুন