আলোচিত মডেল মেঘনা আলমের সহযোগী কাওয়াই প্রতিষ্ঠানের সিইও ও সানজানা ম্যান পাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. দেওয়ান সমির আদালতে বলেছেন, ‘আমি নির্দোষ। রাষ্ট্রদূতকে (সৌদি) আদালতে আনা হোক।’
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা প্রতারণার মামলায় সমিরকে ফের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম।
এদিন সমিরকে একই মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে সমিরকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মোরশেদ আলম তাকে ফের সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানি শেষে সমিরকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি নির্দোষ। আমি এ মামলার সাথে জড়িত না। আমার সাথে মেঘনা আলমের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। আমি একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা। আমি জাপানে ছিলাম। আপনারা ধৈর্য ধরুন। সঠিক ফল আসবে। আমি যদি জড়িত হই, সরকার যে শাস্তি দিবে আমি মাথা পেতে নিব।’
এসময় রাষ্ট্রদূতের সাথে আপনার পরিচয় আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না না। আমি রাষ্ট্রদূতকে চিনি না জানি না। আমি নির্দোষ। আমি সঠিক বিচার চাই। রাষ্ট্রদূতকে আদালতে আনা হোক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজিকেও আনা হয়। মেঘনাকে আনা হোক।’
এর আগে গত ১২ এপ্রিল মডেল মেঘনা আলমের সহযোগী কাওয়াই প্রতিষ্ঠানের সিইও ও সানজানা ম্যান পাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. দেওয়ান সমিরকে (৫৮) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে তিন দিনের রিমান্ড শেষ হলে পুনরায় তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
এজাহার থেকে জানা গেছে, মেঘনা আলম, দেওয়ান সমিরসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিক বা প্রতিনিধি ও দেশীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করিয়ে কৌশলে বিভিন্ন উপায়ে অবৈধ পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে, তাদের সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আসছে। দেওয়ান সমির কাওয়ালি গ্রুপ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং সানজানা ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের ফার্মের মালিক বলে জানা যায়। এছাড়া ইতোপূর্বে মিরআই ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। বিভিন্ন আকর্ষণীয় ও স্মার্ট মেয়েদের তার প্রতিষ্ঠানে ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিয়োগ দিয়ে বিদেশি কূটনীতিক ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের কাছে সহজে যাতায়াত নিশ্চিত করা এবং দেওয়ান সমির তার ম্যানপাওয়ার ও অন্যান্য ব্যবসাকে অধিকতর লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করানোর লক্ষ্যে, চক্রান্তের অংশ হিসেবে অসৎ উদ্দেশ্যে তার সহযোগী আসামিদের সহায়তায় ও অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কূটনীতিককে টার্গেট করে ব্লাকমেইলের মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা চাঁদা হিসেবে দাবি করে আদায় করে থাকে।
এর আগে গত ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ বিজয়ী মডেল মেঘনা আলমকে ডিটেনশন আইনে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে মডেল মেঘনাকে আদালতে হাজির করে আটক রাখার আবেদন করে ডিবি-পুলিশ। পরে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
মন্তব্য করুন