সৌদি রাষ্ট্রদূতকে ফাঁদে ফেলে ৫ মিলিয়ন ডলার চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক মডেল মেঘনা আলম ও তার সহযোগী ব্যবসায়ী মো. দেওয়ান সমিরের বিরুদ্ধে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সমিরকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক মো. আরিফুল ইসলাম।
আসামি পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্র পক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানি শেষে ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হকের আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, দেওয়ান সমির বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের ফাঁদে ফেলেন। এসব কাজে সুন্দরী তরুণীদের ব্যবহার করে। এ রকমই একটি ঘটনায় মেঘনা আলমকে সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসেফ আল দুহাইনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর তাকে দিয়ে রাষ্ট্রদূতকেও ফাঁদে ফেলে পাঁচ মিলিয়ন ডলার দাবি করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে মেঘনা আলমের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা দেওয়ান সমিরের মোবাইলে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পান। তদন্ত কর্মকর্তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন, বলেন ওমর ফারুক।
মামলা থেকে জানা গেছে, বসুন্ধরা এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র সুন্দরী মেয়েদের মাধ্যমে বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রদূত এবং ধনাঢ্য ব্যক্তিদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্লাকমেইল করে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টায় আসামি দেওয়ান সমিরকে সেখানে পাওয়া যায়।
জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়— আসামি দেওয়ান সমির প্রতারক দলের সদস্য। বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ও অবৈধ সম্পর্ক তৈরি করে। পরে সুকৌশলে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে।
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, আসামিরা বাংলাদেশে সৌদি আরবের এম্বাসেডর ইসা বিন ইউসেফ আলদুহাইনকে টার্গেট করে গত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এখন পর্যন্ত তার সঙ্গে প্রতারক দলের সদস্যদের মধ্যে সখ্যতা তৈরি করে। একপর্যায়ে ব্যক্তিগত যোগাযোগ স্থাপন করে ফাঁদে ফেলে পাঁচ মিলিয়ন ডলার দাবি করেন। আসামি দেওয়ান সমির দাবি করা টাকা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করে।
উল্লেখ্য, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় মিস আর্থ বাংলাদেশ-২০২০ বিজয়ী মেঘনা আলমকে গত ১০ এপ্রিল ৩০ দিনের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন