বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক সাব্বির হত্যা মামলার আসামি সাফিয়াত সোবাহান সানভীরকে দায়মুক্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২১ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী মিয়া নূর উদ্দিন আহমেদ অপুসহ ৮ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। এই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরও খালাস পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ-৩ আদালতের বিচারক মো. আবু তাহের এ রায় ঘোষণা করেছেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী খান মোহাম্মদ মঈনুল হাসান লিপন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খালাস পাওয়া অন্যরা হলেন- কাজী সালিমুল হক কামাল, আহমেদ আকবর সোবহান, সাফিয়াত সোবহান, সাদাত সোবহান ও আবু সুফিয়ান।
বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক সাব্বির হত্যা মামলার আসামি সাফিয়াত সোবাহান সানভীরকে দায়মুক্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২১ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে ২০০৭ সালের ৪ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি করা হয়।
মামলাটিতে ২০০৮ সালের ২৪ এপ্রিল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার পিএস মিয়া নূর উদ্দিন আহমেদ অপু, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। পরে ওই বছরের ১৪ জুলাই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। এই মামলায় তারেক রহমানের পিএস ২০১৪ সালের ১৩ জুলাই আত্মসমর্পণ করেন এবং ২৩ মাস ১২ দিন কারাবরণ করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাব্বির হত্যা মামলার ঘটনা ধামাচাপা দিতে তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর ও শাহ আলমের মধ্যে বাবরের বেইলি রোডের সরকারি বাসায় একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে শাহ আলমের কাছে ১০০ কোটি টাকা দাবি করেন তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবর। পরে ৫০ কোটি টাকার বিনিময়ে এই হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তারেক রহমান ও বাবরের সঙ্গে শাহ আলমের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুসারে শাহ আলমের কাছ থেকে বাবর ২১ কোটি টাকা নেন।
এ টাকার মধ্যে বাবরের নির্দেশে বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক আবু সুফিয়ান ২০০৬ সালের ২০ আগস্ট হাওয়া ভবনে ১ কোটি টাকা তারেকের ব্যক্তিগত সহকারী মিয়া নূর উদ্দিন আহমেদ অপুকে বুঝিয়ে দেন। বাবর ৫ কোটি টাকা আবু সুফিয়ানের মাধ্যমে নগদ গ্রহণ করে কাজী সালিমুল হক কামালের কাছে জমা রাখেন। বাকি ১৫ কোটি টাকা বাবরের নির্দেশে আবু সুফিয়ান প্রাইম ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় সালিমুল হক কামালকে ২০টি চেকের মাধ্যমে দেন বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়।
আদালতে মিয়া নূর উদ্দিন আহমেদ অপুর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খান মোহাম্মদ মঈনুল হাসান লিপন। তিনি জানান, বসুন্ধরা পরিচালক সাব্বির হত্যা মামলায় বসুন্ধরা কর্তৃক লুৎফুজ্জামান বাবর বরাবরে ঘুষ লেনদেনের জন্য অত্র মামলা দায়ের করা হয়। প্রথমদিকে মামলার চার্জশিটে মিয়া নূর উদ্দিন আহমেদ অপুর নাম থাকলেও পরবর্তীতে তারেক রহমান ও কাজী সলিমুল হক কামালের নাম যুক্ত করা হয়। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ হোপলেসলি মামলা প্রমাণ করতে না পারায় মাননীয় আদালত সকল আসামিকে খালাস দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন