হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের বান্ধবী ফারজানা সাকি ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ডেপুটি কমিশনার মো. নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
রোববার (২ মার্চ) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালতে ডা. জোবায়ের আহমেদ বাদী হয়ে এ মামলার আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। একইসঙ্গে মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
বাদীর পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, আদালত জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। কোন সংস্থাকে তদন্ত করতে দিয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তাকে এ মামলা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ডা. জোবায়ের আহমেদ ২০২০ সালের ১০ আগস্ট থেকে কুমিল্লা জেলার বড়ুরা থানায় তার প্রতিষ্ঠান ডা. জোবায়ের মেডিকেয়ার অ্যান্ড প্যাথলজি সেন্টারে চিকিৎসাসেবা প্রদান করে আসছিলেন। আসামি ফারজানা সাকি ব্যক্তিগত আক্রোশে নাজমুল ইসলামের সঙ্গে যোগসাজশ করে তাকে ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র করেন। নাজমুল ইসলাম ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর তাকে দেখা করতে বলেন। তবে তিনি না আসায় বারবার তাকে নক করে আসতে বলেন এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি প্রদান করেন।
উপায়ান্তর না দেখে জোবায়ের আহমেদ ১৫ ডিসেম্বর নাজমুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানে যাওয়ার পর দেখতে পান ফারজানা সাকি আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত রয়েছেন। জোবায়ের আহমেদ তাকে ডেকে আনার কারণ জানতে চান। তখন নাজমুল ইসলাম বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। ফারজানা সাকি মারের দৃশ্য ভিডিও করেন। পরে তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
নাজমুল ইসলাম ১৬ ডিসেম্বর জোবায়ের আহমেদকে ফোন করে জানতে চান, তিনি ঠিক আছেন কি না। তখন বাদী বলেন, আপনি আমাকে আপনার অফিসে বিনা কারণে ডেকে নিয়ে অপমান ও লাঞ্ছিত করলেন এবং আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করলেন। আমার কি অপরাধ ছিল? তখন নাজমুল ইসলাম তাকে মামলা দিয়ে আটকে সাইজ করার হুমকি দেন।
নাজমুল ইসলাম পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে ফারজানা খান নামে এক মহিলার দ্বারা জোবায়ের আহমেদের বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় একটি মামলা করান। ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি জোবায়ের আহমেদকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় ডেকে নিয়ে আসেন। এরপর ওইদিন ধানমন্ডির একটি রেস্টুরেন্ট থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন। পরে তাকে হেফাজতে নিয়ে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন।
পরে তাকে রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে হাজির করা হয়। আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে ওই বছরের ৩ এপ্রিল জামিন পান ডা. জোবায়ের আহমেদ।
মন্তব্য করুন