তিন দিন আন্দোলনের পর এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন আইনজীবীরা। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ তথ্য নিশ্চিত করে ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এজলাসে বসে আইনজীবীদের সম্পর্কে কটূক্তি ও অশালীন আচরণ করে। বহু আইনজীবীর সঙ্গে এমন দুর্ব্যবহার, খারাপ আচরণ ও অসৌজন্যমূলক আচরণের কারণে উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতিতে ঢাকা আইনজীবী সমিতিতে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজকের এই জরুরি সভায় সমিতির সাবেক, বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়, আগামীকালকে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) থেকে এই আদালত অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের কর্মচারীরা জানান, আজ সকাল সাড়ে ৮টায় আদালতে আসেন বিচারক। পরে সকাল সাড়ে ১০টায় একজন আইনজীবী এসে বলেন ‘আদালত যেন আজ না বসেন।’ এরপর এদিন বিচারক আর এজলাসে উঠেননি।
ঘটনার সূত্রপাত গত ৬ ফেব্রুয়ারি। এক আসামির জামিন নামঞ্জুর করায় উপস্থিত আসামি পক্ষের আইনজীবীরা বিচারককে উদ্দেশ্য করে ক্ষোভ ঝাড়েন। এসময় বিচারক এজলাস ত্যাগ করে খাস কামরায় চলে যান।
এরপর গত রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) আইনজীবীরা বিচারকের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের মুখে ওইদিন এজলাসে ওঠেননি বিচারক। সেদিন বিচারক নূরে আলম আদালতে আসলেও বিচার কাজ অনুষ্ঠিত হয়নি।
পরদিন সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে এজলাসে উঠেন বিচারক। এ সময় আদালত চত্ত্বরে নিরাপত্তার স্বার্থে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। কয়েকজন আইনজীবী নিয়মিত মামলার শুনানি করেন। এরই মাঝে কয়েকজন আইনজীবী বিচারকাজ পরিচালনায় বাধা দেন।
তারা বিচারককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি কি পুলিশ দিয়ে কোর্ট চালাবেন? আপনার প্রতি অনাস্থা জানিয়েছি। আপনি চলে যান। হট্টগোলের এক পর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে এজলাস ত্যাগ করেন বিচারক। পরে আর এজলাসে ওঠেননি বিচারক।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. মিরাজ উদ্দিন শিকদার সেদিন জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে এক আসামির জামিন নামঞ্জুর করায় উপস্থিত আসামি পক্ষের আইনজীবীরা বিচারককে উদ্দেশ্য করে ক্ষোভ ঝাড়েন। এ সময় বিচারক এজলাস ত্যাগ করে খাস কামরায় চলে যান। আজ আইনজীবীরা বিক্ষোভ করায় বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে তিনি এজলাসে উঠেননি।
মন্তব্য করুন