সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। বাকিরা হলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফরিদ আজিজ, বেনাপোল কাস্টম হাউসের সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী ও তার স্ত্রী হোসনা ফেরদৌস সুমি।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুদকের পৃথক তিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুদকের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকের, দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শিহাব সালাম সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফরিদ আজিজের এবং দুদকের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী ও তার স্ত্রী সুমির দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। এসময় দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদন মঞ্জুর করেন।
আকম মোজাম্মেল হকের আবেদনে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে ঠিকাদারি কাজে কমিশন গ্রহণ, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচারসহ নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগটি অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, তিনি দেশত্যাগ করে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তার বিদেশ গমন রহিত করা একান্ত আবশ্যক।
ফরিদ আজিজের আবেদনে বলা হয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফরিদ আজিজসহ অন্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎপূর্বক বিদেশে অর্থপাচারসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুই সদস্যবিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। অভিযোগসংশ্লিষ্ট ফরিদ আজিজ গোপনে দেশ ত্যাগের চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় তিনি দেশ ত্যাগ করলে সার্বিক অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় তিনি যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ প্রয়োজন।
কাস্টম হাউসের সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ বেলালের আবেদনে বলা হয়, অভিযোগসংশ্লিষ্ট মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরীর দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাইসহ ঘুষ, দুর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসংক্রান্ত একটি অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধানাধীন। অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে-বেনামে দেশে, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে প্রচুর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রয়েছে।
তা ছাড়া তিনি তার ভাইসহ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ডেভেলপার, রিয়েল এস্টেট কম্পানিসহ শেয়ারবাজারে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছেন বলে তথ্য পাওয়া যায়। ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে তার অবৈধ অর্জিত অর্থ তিনি দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভিন্ন মাধ্যমে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করেছেন বলেও অনুসন্ধানকালে তথ্য পাওয়া যায়।
মন্তব্য করুন