বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তেলাপোকার কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস কোম্পানির চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামানসহ চারজনের বিচার শুরু হয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনাল তাদের আদালত বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মাসুদ করিম অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে এ আদেশ দেন।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. বিল্লাল হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এ মামলায় আসামিদের বিচার শুরু হয়েছে। তারা জামিনে রয়েছে। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ হবে।
অন্য আসামিরা হলেন- পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস কোম্পানির এমডি ফরহাদুল আমিন, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মোসলেহ উদ্দিন শামীম ও স্প্রে ম্যান মো. টিটু মোল্লাকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২ জুন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মোবারক হোসেন তুষারের বাসায় তেলাপোকার কীটনাশক দেন ডিসিএস অর্গানাইজেশন লিমিটেডের কর্মীরা। তারা জানান ৩/৪ ঘণ্টা পর বাসায় প্রবেশ করা যাবে। কীটনাশক দেওয়ার ৯ ঘণ্টা পর মোবারক তার স্ত্রী শারমিন জাহান ও সন্তানদের নিয়ে বাসায় আসেন। এরপর তারা সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। ঘরে ঢোকার পর ৩ জুন সকাল ৭টায় শারমিন ও তার দুই সন্তান বমি করেন। তখন আসামি মোসলেহ উদ্দিনকে ফোন করা হলে তিনি জানান, কীটনাশকে এলার্জি ছাড়া অন্য কোনো সমস্যা হবে না। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাওয়ালে দুই সন্তান সাময়িক সুস্থবোধ করেন। ওইদিন রাতে তারা সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন ৪ জুন ভোর ৪টার দিকে ছোট ছেলে শাহির মোবারত জায়ান অসুস্থবোধ করেন। তখন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে বড় ছেলে শায়ান মোবারত জাহিন অসুস্থবোধ করলে তাকেও ওই হাসপাতাল নেওয়া হয়। তখন আইসিইউ নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তারও মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওই বছরের ৫ জুন ‘দায়িত্বে অবহেলাজনিত’ মৃত্যুর অভিযোগে ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন তুষার বাদী হয়ে রাজধানীর ভাটারা থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সমীর চন্দ্র সূত্রধর চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মন্তব্য করুন