দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের স্ত্রী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজকে একদিনের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
এদিন কারাগার থেকে লাইলা কানিজকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ইসমাঈল ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিন চান। শুনানি শেষে আদালত রিমান্ড ও জামিন আবেদন উভয় নজমঞ্জুর করে সাত দিনের মধ্যে একদিনের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ প্লেসমেন্ট শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করেছেন মর্মে দেখা যায়। উক্ত ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে অন্য কারো সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা তা উদ্ঘাটন করা প্রয়োজন। এ ছাড়া তার অর্জিত জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের বিষয়টিও উদ্ঘাটন করা প্রয়োজন। এ জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
লায়লা কানিজের বিরুদ্ধে মামলায় বলা হয়েছে, আসামি লায়লা কানিজ লাকি ১৩ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার ১০৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিকানা অর্জন করছেনে মর্মে রেকর্ডপত্রে প্রমাণিত হয়েছে। এজন্য তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২), ২৭ (১) ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে এ মামলায় তদন্তের স্বার্থে আসামি লায়লা কানিজের মূল আয়কর নথির ২০১২-২০১৩ হতে ২০২৪-২০২৫ করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর নথির স্থায়ী ও বিবিধ অংশসহ সংশ্লিষ্ট যাবতীয় রেকর্ডপত্র জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন।
জানা যায়, গত কোরবানি ঈদে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনায় আসেন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামের এক যুবক। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। জানা যায়, তার বাবা এনবিআর সদস্য এবং কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমান। এরপর আলোচনা চলে মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের কোথায় কী পরিমাণ সম্পদ রয়েছে এসব নিয়ে। এসব আলোচনার মধ্যে একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে মতিউর পরিবারের বিপুল বিত্তবৈভবের চাঞ্চল্যকর তথ্য।
মন্তব্য করুন