অটোরিকশা কিনতে ১ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্ত্রী শিল্পীকে (১৯) হত্যা মামলায় তার স্বামী মো. শাহ আলমকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এর পাশাপাশি আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (০৬ জানুয়ারি) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোছাম্মৎ রোকশানা বেগম হেপী এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে আবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্ট আদালতের পেশকার রাশিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০২১ সালের ২৯ মার্চ ভুক্তভোগী শিল্পীর মা আলেয়া খাতুন ওরফে ছামিরুন বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলাটি করেন। এজাহারে বলা হয়, ৮/৯ মাস আগে শিল্পীর সঙ্গে শাহ আলমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর শিল্পী শ্বশুরবাড়ি থাকলেও হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে ২০২১ সালের ২২ মার্চ স্বামীর সঙ্গে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। বিয়ের পর থেকে ব্যবসার জন্য শিল্পীর কাছে ১ লাখ টাকা যৌতুক চেয়ে আসছিল শাহ আলম। কিন্তু টাকা দিতে না পারলেও সংসারের কথা চিন্তা করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করে আসছিলেন শিল্পী। এরপর ২০২১ সালের ২৯ মার্চ বড় বোন দোলনা যাত্রাবাড়ীতে শিল্পীর বাসায় গেলে শোয়ার ঘরে তাকে নড়াচড়া বিহীন শুয়ে থাকতে দেখা যায়। পরে সবাইকে খবর দিলে জানা যায়, শিল্পীকে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেছে তার স্বামী শাহ আলম। ওইদিনই যাত্রাবাড়ী থানায় মেয়ের স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন আলেয়া খাতুন।
এদিকে মামলার পরদিন ৩০ মার্চ আসামি শাহ আলম যাত্রাবাড়ী থানায় আত্মসমর্পণ করে তার স্ত্রীকে হত্যা করছেন বলে স্বীকার করেন। গ্রেপ্তারের পর আদালতেও কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় শিল্পীকে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন আসামি শাহ আলম। পরে মামলাটি তদন্ত করে যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক মনিবুর রহমান সুজন ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর শাহ আলমকে একমাত্র অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বিচার চলাকালীন ১৩ সাক্ষীর মধ্যে ৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।
মন্তব্য করুন