নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনৈতিক তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর কলাবাগান থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি নিশাতা ইকবাল নদীসহ সংগঠনটির ৪ কর্মীর দুদিনের রিমান্ড আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ৪ আসামির ৭ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হল শাখার সাবেক সভাপতি নিশীতা ইকবাল নদী ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আলফাতারা কাজল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কর্মী হাসান ইমাম শোভন ও ছাত্রলীগ কর্মী শোভন মজুমদার।
এর আগে গত শনিবার রাতে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে নদীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি দল।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ অক্টোবর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
জানা যায়, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি করে ছাত্রলীগ। দেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকে তারা নরকে পরিণত করে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়। এবারের ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরুর দিকে ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচার ভয়াবহ নৃশংসতা চালিয়ে দেশের মানুষকে ভীষণ ক্ষুব্ধ করে তোলে।
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানাবিধ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এ সম্পর্কিত প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে।
মন্তব্য করুন