আন্তর্জাতিক সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ ও রাষ্ট্রীয় আইন কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামকে হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আল মামুন রাসেল।
বুধাবার (২৭ নভেম্বর) ১০ আইনজীবীর পক্ষে তিনি এ নোটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় ও পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর ডাকযোগে পাঠান।
নোটিশ পাঠানো ১০ আইনজীবী হলেন- মফিজুর রহমান মোস্তাফিজ, নিজাম উদ্দিন, আব্দুল হান্নান ভূঞাঁ হৃদয়, তৌহিদুল ইসলাম শান্ত, আতিকুল ইসলাম, মো. মাসুম বিল্লাহ, মো. রাসেল মাহমুদ, মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, মাহফুজুর রহমান ও আল মোমেন।
এতে বলা হয়েছে, ইসকন একটি উগ্রপন্থি সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই সংগঠনের প্রধান কাজ হচ্ছে উসকানিমূলক ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা, যার উদ্দেশ্য সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি। সংগঠনটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অধিকাংশ মৌলিক বিষয় স্বীকার করে না। তারা হিন্দুদের ওপর সম্পূর্ণ নিজস্ব কনসেপ্ট চাপিয়ে দেয়। নিম্নবর্ণের হিন্দুদের দলে ভিড়িয়ে দল ভারী করে। সনাতন মন্দিরগুলো দখল করা এবং সনাতন সম্প্রদায়কে মেরে তাড়িয়ে দেয়। মসজিদে সাম্প্রদায়িক হামলা করে। কিছুদিন আগে ঢাকায় স্বামীবাগে মসজিদের তারাবির নামাজ বন্ধ করে দিয়েছিল ইসকন। নামাজের সময় গান-বাজনা বন্ধ রাখতে বলায় তারা পুলিশ ডেকে তারাবির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পরে বিষয়টি নিয়ে সংঘর্ষ হয়। তারা বাংলাদেশে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক সংগঠন তৈরি করে উগ্র হিন্দুত্ববাদের বিস্তৃতি ঘটায়।
আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, বিগত সরকারের পতনের পর দেশে বিভিন্নভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির পেছনেও সংগঠনটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তারা বাংলাদেশে এর আগে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী গ্রেপ্তার হলে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) তাকে আদালতে উপস্থাপনের পর ইসকনের নেতাকর্মীরা সম্মিলিত ও পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।
এতে বলা হয়েছে, এ থেকে সহজেই অনুমান করা যায়, সংগঠনটি দেশের আইনকানুন তোয়াক্কা করে না, নিজেদের আইনের ঊর্ধ্বে মনে করে, আইন-আদালত ও সরকারের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ নেই। দেশে সম্প্রীতি বিনষ্ট করার পরিকল্পনা নিয়েই চিন্ময় কৃষ্ণ কাজ করছিলেন এবং এ ধরনের সন্ত্রাসী সমর্থকগোষ্ঠী তৈরি করে আসছেন।
নোটিশ আরও বলা হয়েছে, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরবসহ আরও বেশকিছু রাষ্ট্রে ইসকন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে সত্তর ও আশির দশকে ইসকন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানে ইসকনের কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারি জারি রয়েছে। বাংলাদেশে তাদের সব জঙ্গি কার্যক্রম বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। ইসকনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ কার্যক্রম এখনই বন্ধ করা না গেলে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাসহ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে।
মন্তব্য করুন