দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মী তানজিল জাহান তামিমকে বাসায় ঢুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় হাতিরঝিল থানার মামলায় নতুন করে গ্রেপ্তার মো. রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে গ্রেপ্তারকৃত রাসেলকে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম আজম।
এসময় তিনি মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার ও চোরাই মাল উদ্ধারের স্বার্থে আসামিকে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালত প্রত্যেক আসামির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মোর্শেদ হোসেন শাহীন আদালতে শুনানিতে বলেন, সংবাদকর্মী হত্যার ঘটনায় জাতি স্তম্ভিত হয়েছে। বাসায় ঢুকে পুরো পরিবারকে আক্রমণ করা হয়েছে। যা সিসি টিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে। আসামিরা প্রভাবশালী উল্লেখ করে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সর্বোচ্চ রিমান্ড চান তিনি। আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. মাহবুবুর আলম সরকার বলেন, সন্দেহভাজন হিসেবে আসামি রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি একজন রিকশাচালক। ঘটনার সময় হট্টগোলে দেখে তিনি এগিয়ে যান। একারণেই সিসিটিভি ফুটেজে তাকে দেখা গেছে। আসামি রাসেল আদালতে বলেন, আমি আক্রমণ করিনি। অপরাধ করিনি বিধায় পালিয়ে যাইনি।
তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. রুহুল কবির খান গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে রাসেলকে শনাক্ত করা হয়। তিনি সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন। এর আগে একই মামলায় গ্রেপ্তার ৫ আসামি মো. আব্দুল লতিফ, মো. কুরবান আলী, মাহিন ওরফে মাহিম, মোজাম্মেল হক কবির ও মো. বাঁধনকে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য চার দিন করে রিমান্ড আদেশ দেয় আদালত।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর রামপুরা মহানগর প্রজেক্টে বাড়ি নির্মাণ ও ফ্লাট ভাগাভাগি নিয়ে জমির মালিক ও প্লিজেন্ট প্রোপার্টিজ (প্রা.) লি. নামে একটি ডেভেলপার কোম্পানির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। দ্বন্দ্বের জেরে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ডেভেলপার কোম্পানি, জমির মালিক ও ভবনের অন্যান্য মালিকের মধ্যে ভাঙচুর ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে গুগুরুতর আহত হন দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা তানজিল জাহান তামিম। পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
নিহত তামিমের বাবা প্রকৌশলী সুলতান আহমেদ জানান, চুক্তি অনুযায়ী ৫টি ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও ডেভেলপার কোম্পানি মাত্র আমাদের দুটি ফ্ল্যাট হস্তান্তর করে। বাকি তিনটির মধ্যে একটি ফ্ল্যাট মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তার শ্বশুরের কাছে বিক্রি করে প্লিজেন্ট প্রোপার্টিজ। এর জেরেই প্রাণ গেল তামিমের।
এ ঘটনায় নিহত তামিমের বাবা সুলতান আহমেদ বাদী হয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় ১৬ জন এজহার নামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ১১থেকে ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মন্তব্য করুন