জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পলাতক আসামি তারেক রহমানের ৯ বছর ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২ আগস্ট) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে দুদকের করা মামলাটি রায়ের জন্য ২ আগস্ট দিন ধার্য করেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ রায়ের দিন ধার্য করেন।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি তারেক রহমানকে ৩ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অনাদায়ে তাকে আরও ৩ মাস সাজা ভোগ করতে হবে।
অপরদিকে জুবায়দা রহমানকে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৩৫ লাখ জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে তাকে আরও ১ মাস সাজা ভোগ করতে হবে।
সেই সঙ্গে তারেক-জুবায়দা দম্পতির অপ্রদর্শিত সম্পদ হিসেবে ২ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ মামলায় তাদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল।
২০২২ সালের ১ নভেম্বর পলাতক তারেক ও জুবাইদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি আদালত গ্রেপ্তার পরোয়ানার তামিল প্রতিবেদন গ্রহণ করেন। এরপর তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেন আদালত। গত ১৩ এপ্রিল আদালত পলাতক তারেক ও জুবাইদার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। ২১ মে আদালতে মামলার বাদী দুদকের উপপরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল হুদা সাক্ষ্য দেন।
গত ২৪ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক তৌফিকুল ইসলাম শেষ সাক্ষী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দেন। এ নিয়ে মামলাটিতে ৫৬ সাক্ষীর মধ্যে ৪২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এরপর আদালত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ২৭ জুলাই দিন ধার্য করেন।
আরও পড়ুন : বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের জুতা মিছিল
মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জুবাইদা রহমান ও তার মা অর্থাৎ তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। ২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এরপরই মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জুবাইদা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।
এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল হাইকোর্ট জুবাইদার করা মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দেন। একইসঙ্গে ওই মামলায় আট সপ্তাহের মধ্যে জুবাইদাকে বিচারিক আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই লিভ-টু-আপিল করেন জুবাইদা। এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ লিভ-টু-আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
মন্তব্য করুন