কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর আজ থেকে গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। একইসঙ্গে রিটে কোটা আন্দোলনের ৬ জন সমন্বয়কের ডিবি হেফাজত থেকে মুক্তির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে এই রিটে।
সোমবার (২৯ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন প্রীতম ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা লিপি জনস্বার্থ-এ এ রিট দায়ের করেন। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, সেনাবাহিনী প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চে দুপুর দেড়টায় এর শুনানি হবে। এই বেঞ্চের রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তা সহকারি অ্যাটর্নী জেনারেল আনিচ উল মাওয়া এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে রোববার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক ডিবি কার্যালয়ে গহফাজতে থাকাবস্থায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সব কর্মসূচি ‘প্রত্যাহারের’ ঘোষণা দিয়ে ভিডিও বার্তা দেন। নাহিদ ইসলামসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাতজন সমন্বয়ককে গত তিন দিনে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়।
অন্যরা হলেন- আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, নুসরাত তাবাসসুম (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হল শাখার সমন্বয়ক) ও আরিফ সোহেল (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক)। ভিডিও বার্তায় আরিফ সোহেল ছাড়া অন্য ছয় সমন্বয়ককে দেখা যায়। পরে এ ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে নতুন কর্মসূচি দিয়েছে সংগঠনটির অন্য সমন্বয়করা। কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ (সোমবার) সারাদেশে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
হেলিকপ্টার থেকে গুলি না ছোড়ার দাবি
সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সহিংসতা ও বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় হেলিকপ্টার থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেষ ছোড়ে র্যাব। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। যদিও র্যাব ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে তা অস্বীকার করা হয়।
র্যাব এক বিবৃতিতে জানায়, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে গত ১৮ জুলাই সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে। শাটডাউনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালীন কতিপয় দুষ্কৃতকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, অগ্নিসংযোগ, সংঘর্ষ ও নাশকতার মাধ্যমে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি, সরকারি ও জনগণের সম্পত্তির ক্ষতি সাধন করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টা চালায়।
একইসঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে রোববার (২৮ জুলাই) রাতে এক বিবৃতিতে এমনটাই দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্র-ছাত্রীদের মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনা, হত্যা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, নাশকতা ও নাশকতাজড়িত পরবর্তী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ীদের যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে জবাবদিহি করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মন্তব্য করুন