সেতু ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বনানী থানার মামলায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ও ব্যবসায়ী রেজাউল হাসনাত ডেভিডের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ মামলার শুনানি শেষে বিচারক বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। ৩০০ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতি হয়েছে। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত, নজীরবিহীন।
তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, সন্ধিগ্ধদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। কিছু তথ্য-উপাত্ত আছে এজন্য তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রিমান্ড হিসেবে যেটা প্রচলিত আমরা বিচারকরা সেটা মিন করি না। রিমান্ড বলতে জিজ্ঞাসাবাদের অংশ। সার্বিক বিবেচনায় তাদের প্রত্যেকের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হলো।
এদিন আন্দালিব ও ডেভিডকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে ডিবি পুলিশের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের পরিদর্শক আবু সাইদ মিয়া তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় তাদের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ ও ব্যারিস্টার আলী বাশার রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানিতে ডেভিডের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন, ডেভিড গত ১৩ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত দেশের বাইরে ছিলেন। অথচ তদন্ত কর্মকর্তা বলছেন তিনি বাসায় বসে উসকানি, অর্থায়ন করেছেন। ভূতও তো পারবে না দেশের বাইরে থেকে এমন ঘটনা ঘটাতে। বাংলাদেশে আসার পর তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ জনগণের সেবক। কিন্তু নিরীহ মানুষকে ধরে এনে গ্রেপ্তার করবে এমন ক্ষমতা দেওয়া হয়নি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাপস কুমার পাল বলেন, পাসপোর্ট বিষয় না। অর্থের জোগান যে কোনো জায়গা থেকেই করা যায়। এরপর পার্থের পক্ষে রিমান্ড শুনানি হয়। তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তার ক্ষেত্রেও একই কথা। পার্থ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। রিমান্ডে নিলে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।
পার্থের আইনজীবী আলী বাশার বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় থেকে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। জনপ্রিয় ব্যক্তির জন্য তাকে ভুক্তভোগী করা হয়েছে। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। রিমান্ড নামঞ্জুর করে সম্মানের সঙ্গে তাকে জামিন দেওয়া হোক। তিনি বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। তিনি আলাদা দল চালান।
এ সময় আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, রাজনৈতিক জীবনে অল্প সময়ে আল্লাহর রহমতে অনেক মানুষের বিশ্বাসের জায়গায় যেতে পেরেছি। আমাদের মতো যারা পজিটিভ রাজনীতি করে, তাদের দেখে যেন আরও দশটা ছেলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আসে। রাজনীতি বাঁচলেই বাঁচবে দেশ। সুষ্ঠু রাজনীতি থাকলেও দেশ বাঁচবে।
এর আগে গত ২০ জুলাই বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কেয়ার টেকার মো. রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা করেন।
মন্তব্য করুন