কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই ছয়জনের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করবে এ সংক্রান্ত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন। এছাড়া ওইদিনের সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তথ্য-প্রমাণ চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। এছাড়া পরিস্থিতি আরেকটু স্বাভাবিক হলে এবং কার্যক্রম আরেকটু গুছিয়ে কমিশন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে।
বুধবার (২৪ জুলাই) প্রথম বৈঠকের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান কমিশনপ্রধান হাইকোর্টের বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামান।
কমিশন গঠনের পর বুধবার দুপুরে প্রথম বৈঠকে বসে কমিশন। বৈঠকে বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান, অতিরিক্ত সচিব (আইন অনুবিভাগ) জাহেদা পারভীন, আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার শেখ মো. আমীনুল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব (আইন-১ অধিশাখা) তানভীর আহমেদ ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি নীতি অধিশাখার উপসচিব মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।
বৈঠকের পর কমিশনপ্রধান হাইকোর্টের বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করেছি। আজ প্রথম মিটিং করলাম। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ৫ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত সংঘটিত অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ছয়জনের মৃত্যুর বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। ডাক অথবা ইমেইলে কমিশনের কাছে তা পাঠানো যাবে। আর কমিশনের দৈনন্দিন কার্যক্রম সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।’
কমিশনের তদন্ত ১৬ জুলাইয়ের ঘটনা নিয়েই হবে কিনা জানতে চাইলে বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামান বলেন, ‘আমার যে টার্মস অব প্রেফারেন্স আছে, সেই টার্মস অব প্রেফারেন্স অনুযায়ীই হবে। সে অনুযায়ী কমিশনের কার্যক্রম চলবে। এখন পর্যন্ত ১৬ জুলাই নিহত ছয়জনের মৃত্যুর ব্যাপারেই প্রজ্ঞাপনে বলা আছে।’
ঘটনাস্থলগুলো পরিষ্কার করে ফেলা হয়েছে। এখন ঘটনাস্থান পরিদর্শনে প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে কিনা, প্রশ্নে কমিশনপ্রধান বলেন, ‘একটা অস্বাভাবিক অবস্থা বিরজ করছিল। কারফিউ ছিল, সাধারণ ছুটি ছিল। যে কারণে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। আমরা চেষ্টা করব সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করার। আপনাদের একটা কথা বলতে পারি, আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সে দায়িত্ব আমি সম্পূর্ণ সততা, নিষ্ঠা এবং স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে পালন করার চেষ্টা করব।’ বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কমিশন কাজ শেষ করতে পারবে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আশা করি শেষ করতে পারব।’
গত ১৮ জুলাই এই তদন্ত কমিশন গঠন করে সরকার। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানকে কমিশনের দায়িত্ব দিয়ে কমিশন গঠনের কথা জানায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিশনকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। সরকারের এক তথ্যবিরণীতে এ তথ্যসহ বলা হয়, গত ১৬ জুলাই দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের জন্য এ কমিশন গঠন করা হয়। গত ১৯ জুলাই তদন্ত কমিশনের প্রধান হিসেবে বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এখন কমিশন দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সবার বক্তব্য শুনে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করবে।
মন্তব্য করুন