বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় রাজধানীর পল্টন মডেল থানার মামলায় পিএসসির দুই উপপরিচালকসহ ছয় আসামির ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা আদালতে এ আবেদন করেন। তাদের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য ৯টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী ১৬ জুলাই কারাগারে আটক ৬ আসামির উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানি হবে।
রিমান্ডে নিতে যেসব কারণ উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো হলো- পরীক্ষার নাম : বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বাংলাদেশ রেলওয়ে), পদের নাম : সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (ননক্যাডার) নিয়োগ পরীক্ষার মূল প্রশ্ন তারা কীভাবে সংগ্রহ করত এবং তাদের কে সরবরাহ করত, প্রশ্নফাঁসের এই চক্রটির সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত; কীভাবে তারা প্রশ্নফাঁস করত; কারা কারা কীভাবে তাদের কাছ থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করত; কীভাবে নিয়োগ প্রার্থী পরীক্ষার্থীর কাছে ওই পদের প্রশ্ন এবং প্রশ্নের উত্তর বিতরণ করত; কতজন নিয়োগ প্রার্থী পরীক্ষার্থীর কাছে ওই পদের প্রশ্ন এবং প্রশ্নের উত্তর বিতরণ করা হয়েছে; প্রশ্নফাঁসের এ চক্রটির দ্বারা প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে মোট কত পরিমাণ অর্থ লেনদেন হয়েছে; লেনদেনকৃত অর্থের সুবিধাভোগীদের শনাক্তকরণ; মামলাসংক্রান্তে গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার।
রিমান্ড চাওয়া আসামিরা হলো- পিএসসির উপপরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, সাবেক সেনা সদস্য নোমান সিদ্দিকী, অডিটর প্রিয়নাথ রায় ও ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম। তবে কারাগারে আটক গাড়িচালক আবেদের ছেলে সোহানুর রহমান সিয়াম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসানের কোনো আবেদন করা হয়নি।
এর আগে গত ৯ জুলাই গ্রেপ্তার ১৭ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এর মধ্যে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবনসহ সাত আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। তবে এদের মধ্যে আবু সোলায়মান মো. সোহেল নামে এক আসামি স্বীকারোক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে স্বীকারোক্তি বাদেই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ মামলায় দায় স্বীকার করা আসামিরা হলো- পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান, অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সায়েম হোসেন এবং বেকার যুবক লিটন সরকার।
গত ৮ জুলাই রাজধানীর পল্টন থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইনে সিআইডির উপপরিদর্শক নিপ্পন চন্দ্র চন্দ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০/৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারনামীয় আসামির মধ্যে সাবেক সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়, শরীফুল ইসলাম ভুইয়া, দীপক বনিক, মো. খোরশেদ আলম খোকন, কাজী মো. সুমন, এ কে এম গোলাম পারভেজ, মেহেদী হাসান খান, মো. গোলাম হামিদুর রহমান, মু. মিজানুর রহমান, আতিকুল ইসলাম, এ টি এম মোস্তফা, মাহফুজ কালু, আসলাম ও কৌশিক দেবনাথ পলাতক রয়েছে।
মন্তব্য করুন