পাবনায় পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে আপন দুই ভাইসহ তিন বন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৪ জুন) দুপুর ১টার দিকে সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের ভাদুরিয়া ডাঙ্গী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- চরতারাপুর ইউনিয়নের নতুন গোহাইবাড়ি এলাকার আলাল প্রামাণিকের দুই ছেলে ছাব্বির হোসেন (১৩) ও সিয়াম হোসেন (১১)। অপরজন চরতারাপুর ইউনিয়নের আটঘরিয়াপাড়া গ্রামের ইসলাম সরদারের ছেলে নূর হোসেন (১১)।
ছাব্বির স্থানীয় নতুন বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আর সিয়াম গোহাইল বাড়ি সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। অন্যদিকে নূর হোসেন কাঁচিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয়রা বলেন, দুপুর ১টার দিকে বাড়ির পাশের একটি আম গাছের সঙ্গে কয়েকজন আর্জেন্টিনার পতাকা টাঙাচ্ছিল। রোদের সময়ে পতাকা টাঙাতে নিষেধ করা হলে তখন তারা বাড়ি চলে যায়। সেখান থেকে তারা নদীতে গোসল করতে যায়। একপর্যায়ে তারা ডুবে যায়। স্থানীয়রা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে একজনকে জীবিত উদ্ধার করে। অপর তিনজনকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয়রা আরও বলেন, উঁচু নিচু হয়ে থাকা বালুর স্তূপের উপর দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বালু ধসে তারা পানিতে দ্রুত ডুবে যায়। ছোট দুইজনকে বাঁচাতে গিয়ে বড় ভাই ছাব্বিরেরও মৃত্যু হয় বলে জানান তারা।
এদিকে একই এলাকার তিনজনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহতের বাবা আলাল হোসেন বলেন, আমি এখন কেমন করে বেঁচে থাকব। আমি তো একেবারে এতিম হয়ে গেলাম। দুই ছেলে একসঙ্গে দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল। একজন বাবার পক্ষে এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
চরতারাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, কয়েকজন বন্ধু মিলে পদ্মা নদীতে গোসল করতে গিয়ে চারজন তলিয়ে যায়। একজনকে বাঁচানো গেলেও তিনজনকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। অল্প কয়েক মিনিটের ব্যবধানে একসঙ্গে তিনজনের মৃত্যুতে আমরা হতভম্ব হয়ে পরছি। পুরো গ্রাম এখন শোকে কাতর হয়ে যাচ্ছে। এমন মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না।
পাবনা সদর থানা পুলিশের ওসি মো. রওশন আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, একসঙ্গে গোসলে নেমে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি খুবই বেদনাদায়ক। এখন নদীতে পানি বৃদ্ধি হচ্ছে তাই সন্তানদের দেখে রাখতে পরামর্শ দেন তিনি।
মন্তব্য করুন