পাবনার সাঁথিয়ায় রিক্তা খাতুন (৪৫) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এরপর তার মরদেহ বাথরুমে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে।
রোববার (২৩ জুন) দুপুরে উপজেলার কাশিনাথপুর শগুইনা গ্রামে রহস্যজনক এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই স্বামী ও তার ছেলে পলাতক রয়েছে।
নিহত রিক্তা খাতুন কাশিনাথপুর ইউনিয়ন শগুইনা পশ্চিমপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর প্রামানিকের স্ত্রী ও আমিনপুর থানার নয়াবাড়ি গ্রামের মোবুদ্ধি শিকদারের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহতের ছেলে দুরুন্ত (২২) মাদকাসক্ত । প্রায়ই মাদকের টাকার জন্য মায়ের সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি করতেন।
টাকা না দিলে বাবাকে সঙ্গে নিয়ে মাকে বিভিন্ন সময়ে মারধর করতেন। মারধরের শিকার হয়ে রিক্তা খাতুন বিভিন্ন সময় বাবার বাড়িতে চলে যেতেন আবার ফিরে আসতেন।
এভাবে মাঝেমধ্যেই তাদের সংসারে অশান্তি চলত। রোববার দুপুরের দিকে এক প্রতিবেশী গৃহবধূর বাড়িতে অস্বাভাবিক অবস্থা লক্ষ্য করেন। এরপর তিনি বাথরুমে মরদেহ ঝুলতে দেখেন। তখন তিনি আত্মীয়-স্বজনকে খবর দেন।
পরে স্থানীয়রা মরদেহ উদ্ধার করে বেড়া হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকও তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর পুলিশ ও সাংবাদিকদের খবর দেওয়া হয়।
স্বজনরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, সকালে কাঠ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ বাথরুমে ঝুলিয়ে রেখে বাবা ও ছেলে পালিয়ে গেছেন।
নিহত রিক্তা খাতুনের বড় বোনের মেয়ে আনোয়ারা খাতুন দুলি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার খালার ছেলে মাদকাসক্ত। মাদকের জন্য টাকা চাইত। না দিলে বাবা ও ছেলে মিলে খালাকে বেধড়ক মারধর করত। মারধরের শিকার হয়ে মাঝেমধ্যে খালা আমাদের বাড়িতে চলে আসত। এরপর স্বামী এসে আবার নিয়ে যেত। আমাদের আত্মীয় স্বজনদের সামনে খালার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করত। কিন্তু ভেতরে খালাকে খুব মারধর করত। ফোনে আমাদের বিভিন্ন সময় খালা বলত আমাকে বোধহয় মেরে ফেলবে তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে এসে দেখি খালার পুরো শরীর জখম হয়ে আছে। নাক-কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। আমার খালাকে বাপ-বেটা মিলে পিটিয়ে হত্যা করে বাথরুমের মধ্যে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে। এ হত্যার বিচার চাই।’
নিহতের বাবা মোবুদ্ধি শিকদার বলেন, মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, নিহতের স্বামী ও ছেলেসহ পুরো পরিবার নেশাগ্রস্ত। আমরা মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নিয়ে আসছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন