কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৪, ০৮:৩৯ পিএম
আপডেট : ২৩ জুন ২০২৪, ০৯:৩৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

রাসেল ভাইপার ভেবে পিটিয়ে মারা হলো দুই অজগর

কক্সবাজারের চকরিয়ায় জেলের জালের ধরা পড়া দুই অজগর। ছবি : কালবেলা
কক্সবাজারের চকরিয়ায় জেলের জালের ধরা পড়া দুই অজগর। ছবি : কালবেলা

কক্সবাজারের চকরিয়ায় রাসেল ভাইপার মনে করে দুটি অজগরকে পিটিয়ে মেরেছে এলাকাবাসী। রোববার (২৩ জুন) সকালে চকরিয়ার ছাইরাখালী ও বালুরছিরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর উপকূলীয় এলাকায় রাসেল ভাইপারের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার ছাইরাখালী এলাকার বাসিন্দা সাবেক হেডম্যান জহিরের ছেলে খোকনসহ অপর এক জেলে খালে মাছ ধরতে যান। এক পর্যায়ে দুটি জালে উঠে আসে। পরে রাসেল ভাইপার মনে করে সাপ দুটিকে মেরে ফেলা হয়।

চকরিয়ার চিরিংগা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জেলেরা প্রতিদিনের মতো উপকূল এলাকার খালে মাছ ধরতে যান। তারা সকালে জাল ফেললে এক পর্যায়ে সাপগুলো তাদের জালে উঠে আসে। পরে সাপগুলোকে মেরে ফেলা হয়।

এদিকে পিটিয়ে মারা সাপ দুটি রাসেল ভাইপার নয় বরং নিরীহ-নির্বিষ অজগর সাপ বলে চিহ্নিত করেছেন বাংলাদেশ অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা।

জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী দুটি হত্যায় দুঃখ করেন জোহরা মিলা। তিনি বলেন, সাপ কৃষকের পরম বন্ধু। প্রাণীটি ইঁদুর খেয়ে কৃষকের যেমন উপকার করে, তেমনই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই রাসেল ভাইপারের আতংকে মানুষ গণহারে এভাবে সাপ হত্যা শুরু করলে সেটা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না।

তিনি আরও বলেন, অজগর নির্বিষ সাপ। এটি নিশাচর ও খুবই অলস প্রকৃতির, প্রয়োজন ছাড়া নড়াচড়াও করে না। এই প্রজাতিটি গাছে একাকী বাস করলেও শুধু প্রজননকালে জোড়া বাধে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে এদের প্রজননকাল। দেশের ম্যানগ্রোভ বন, ঘাসযুক্ত জমি, চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এদের দেখা পাওয়া যায়। সাপটি সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না। খাদ্য হিসেবে এরা ইঁদুর, কচ্ছপের ডিম, সাপ, বন মুরগি, পাখি, ছোট বন্যপ্রাণী ইত্যাদি খায়। সাপটি নিজের আকারের চেয়েও অনেক বড় প্রাণী খুব সহজেই গিলে খেতে পারে।

জোহরা মিলা বলেন, চামড়ার জন্য সাপটি পাচারকারীদের লক্ষবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ফলে আমাদের বনাঞ্চল থেকে এটি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল-২ অনুযায়ী এ বন্যপ্রাণীটি সংরক্ষিত, তাই এটি হত্যা বা এর যে কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বন্যা নিয়ে দুঃসংবাদ দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রীর

জিম্মিদের মুক্তিতে মার্কিন প্রস্তাবে সম্মত ফিলিস্তিনিরা

নিজ এলাকায় চিকিৎসা নিতে এমপিদের অনুরোধ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

দেশের প্রথম আইন বিশ্ববিদ্যালয় হবে শিবচরে : আইনমন্ত্রী

তাঁতীবাজার সড়ক অবরোধ / গান-কবিতায় বেগবান হচ্ছে জবি শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন

প্রথম কার্য দিবসে কী করবেন যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী?

এসিআইয়ে অভিজ্ঞতা ছাড়া চাকরি, আছে বিদেশ ভ্রমণের সুবিধা

বাবাকে খুঁজে পেতে নড়াইলের তরুণী পাবনায়

এবার বেনজীরের ডুপ্লেক্স বাড়ি জব্দ

লিপি মনোয়ারকে বাংলাদেশ লেখিকা সংঘের স্বর্ণপদক প্রদান

১০

নৌকাডুবে প্রাণ গেল দুই বন্ধুর

১১

১৩০০ বছর আগের ঐতিহাসিক ‘জাদুর’ তলোয়ার উধাও!

১২

সুপার স্পেশালাইজডের বিদ্যমান আইনে নতুন সংযোজন প্রয়োজন : বিএসএমএমইউ উপাচার্য

১৩

ছাত্রলীগের বাধা উপেক্ষা করে ঢাবিতে কোটাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু

১৪

এশিয়া কাপের আম্পায়ারিং প্যানেলে জেসি

১৫

যে কারণে ইয়ামালকে পুরো ম্যাচ খেলাচ্ছে না স্পেন?

১৬

দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে আরেক ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ২

১৭

চমেক হাসপাতালে বার্ন ইউনিটের নির্মাণকাজ সেপ্টেম্বরে শুরু : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

১৮

পুলিশি বাধায় সড়কেই বসে পড়ল জবি শিক্ষার্থীরা

১৯

আকর্ষণীয় বেতনে রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট নেবে সিপিডি

২০
X