উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও আষাঢ়ের শুরুতেই চলনবিলের খালগুলোতে নতুন পানি ঢুকতে শুরু করেছে। আর ওই পানিতে পাওয়া যাচ্ছে ছোট-বড় বোয়াল মাছ।
জাল, জুইতা ও টেঁটা দিয়ে সেসব মাছ ধরছেন শৌখিন ও পেশাজীবী মাছ শিকারিরা। বোয়াল মাছ ধরতে চলনবিলের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন তারা।
জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে চলনবিলের তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল, ধামাইচ, ৮ নম্বর ব্রিজ, ৯ নম্বর ব্রিজ ও ১০ নম্বর ব্রিজ এলাকায় ধরা পড়ছে ছোট-বড় বোয়াল মাছ। এ মাছগুলোর মধ্যে অধিকাংশ মাছ ৫ থেকে ৭ কেজি ওজনের। বোয়াল মাছ ধরা পড়ার খবরে বিলপাড়ে উৎসুক জনতার ভিড় জমে যায়। বোয়াল মাছ কিনতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছেন মানুষ। তবে পেশাজীবী শিকারিরা মাছ বিক্রি করলেও শৌখিন শিকারিরা বিক্রি করছেন না।
উপজেলার মাগুড়াবিনোদ গ্রামের বাসিন্দা মতিউর রহমান বলেন, শনিবার রাতে বিলের মধ্যে কুচ দিয়ে আঘাত করার পর পাঁচ কেজির বোয়াল মাছ পেয়েছি। আজ রোববার (২৩ জুন) সকালে তাড়াশ বাজারে ১২০০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করেছি।
উপজেলার ধামাইচ গ্রামের শৌখিন মাছ শিকারি জাফর উদ্দিন বলেন, সকালে তাড়াশ উপজেলার ৯ নম্বর ব্রিজ এলাকার খাল থেকে ৬ কেজি ওজনের তিনটি ডিমওয়ালা বোয়াল মাছ পেয়েছি। দুটি বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ১ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। আর একটি বাড়িতে নিয়ে যাব।
কুন্দইল গ্রামের ফিরোজ আহমেদ বলেন, বিলে নতুন পানি এসেছে তাই আমি ছিপ জাল লাগিয়েছি। সকাল থেকেই মাছ ধরছিলাম। হঠাৎ করেই জাল তুলতে বেশি ওজন লাগে। তখনই ভাবছিলাম হয়তো একটা বড় মাছ উঠেছে। সম্পূর্ণ জাল তুলে দেখি ৪ কেজি ওজনের একটি বোয়াল। মাছটি ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি।
বোয়াল মাছ কিনতে আসা ফেরদৌস আলম বাচ্চু বলেন, তাড়াশ বাজারে অনেকদিন পর চলনবিলের বোয়াল মাছ পাওয়া গেছে। আগে থেকেই ইচ্ছে ছিল বড় বোয়াল কেনার। আজ সুযোগ মতো পেয়েছি। ৫ কেজি ওজনের বোয়াল মাছটি ৬ হাজার টাকা দিয়ে মাছটি কিনে নিয়েছি।
দোবিলা ইসলামপুর ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক গোলাম কিবরিয়া উজ্জ্বল বলেন, চলনবিলে বন্যার নতুন পানি আসায় নদ-নদী ও খাল বিলে পানিতে ভরে যাচ্ছে। এ পানিতে ডিম ছাড়ার জন্য মা বোয়াল মাছ কম পানিতে এসে লাফালাফি করছে। এ সুযোগে পেশাদার ও শৌখিন মাছ শিকারিরা দলবেঁধে প্রতিদিন এসব জায়গা থেকে ছোট বড় বিভিন্ন ওজনের বিভিন্ন মাছ ধরছেন।
তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশগুল আজাদ কালবেলাকে বলেন, মা মাছ ধরলে মাছের বংশ বৃদ্ধি হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ডিমওয়ালা মা মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
তিনি বলেন, আর চলনবিল একটি বৃহৎ এলাকা। তবে মা মাছ নিধনের বিরুদ্ধে শিগগিরই চলনবিল এলাকার তাড়াশ উপজেলা অংশে মৎস্য শিকারিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে।
মন্তব্য করুন