টাঙ্গাইলে রাসেল ভাইপার নিয়ে আতঙ্কিত জেলাবাসী। অপরদিকে রাসেল ভাইপার থেকে সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকতে বলেছেন সিভিল সার্জন ডা. মো.মিনহাজ উদ্দীন। এছাড়াও তিনি জেলার সব হাসপাতাল সতর্ক অবস্থানে রেখেছেন বলেও জানান।
জানা যায়, জেলা শহর ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সাপ দেখা গিয়েছে বলে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে আতংক ছড়াচ্ছে। আবার সেই পোষ্টটি মিথ্যা বা গুজব বলে নতুন পোষ্ট দিচ্ছেন। অথচ এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্য বা রাসেল ভাইপার সাপ পাওয়া গেছে বা উদ্ধার হয়েছে এমন কোন তথ্য জানা যায়নি।
বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, টাঙ্গাইলে শহরের সাবালিয়া পাঞ্জাপাড়ায় শনিবার (২২ জুন) সকালে বিষধর সাপের দেখা মিলে। পরে সেটিকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়।
টাঙ্গাইল জজ কোর্টের সাবেক জিপি অ্যাড. আব্দুর রশিদের বাসার গেটে পাওয়া যায় এ সাপটি। অনেকে এটিকে রাসেল ভাইপার সাপ বলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিসহ পোস্ট করেন।
অ্যাড. আব্দুর রশিদ জানান, শনিবার (২২ জুন) সকাল থেকে শহরে বৃষ্টি হচ্ছিল। আমি বাসার নিচে চেম্বারে বসে কাজ করছিলাম। বৃষ্টির মধ্যে বেলা সাড়ে ১১ টায় আমার বাসার এক ভাড়াটিয়া বাইরে যাওয়ার সময় দেখেন একটি সাপ গেট পেরিয়ে বাসার ভিতরে প্রবেশ করছে। তখন তিনি ডাকাডাকি করলে আমার চেম্বারের লোকজন গিয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে সাপটি মেরে ফেলে। এরপর থেকে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে রাসেল ভাইপার সাপ আতংকের সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সাপ যেহেতু একসঙ্গে অনেকগুলো বাচ্চা দেয়। সেহেতু বাসার আশেপাশে আরও সাপ থাকতে পারে। আমাদের এই মহল্লায় সাপ নিধনে দ্রুত অভিযান চালানো জরুরি।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান জানান, আমরা মূলত বন্যপ্রাণি নিয়ে কাজ করি। বর্তমানে সারাদেশে রাসেল ভাইপার নিয়ে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি জানলাম। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.খন্দকার সাদেকুর রহমান জানান, আমাদের হাসপাতালে ঈদের দুই দিন আগে একজন সাধারণ সাপে কাটা রোগী আসছিল। তাকে দ্রুত চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে বাড়িতে পাঠিয়েছি। এছাড়াও আমাদের কাছে ৪ থেকে ৫জন রোগী এক সঙ্গেও যদি আসে তাহলে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, একটি সাপে কাটা রোগীকে একসঙ্গে ১০টি অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়। সেই হিসেবে ৫জন রোগীর জন্য ১০০টি অ্যান্টিভেনম প্রয়োজন। অ্যান্টিভেনম সমস্যা হবে না। আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিভেনম সংগ্রহ করবো।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মো. মিনহাজ উদ্দিন জানান, রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপে আতংকিত না হয়ে আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সাপে কাটা রোগীদের জন্য প্রত্যেক উপজেলায় ১০টি করে অ্যান্টিভেনম ডোজ এবং জেলায় ১০০টি ডোজ সংরক্ষিত আছে। প্রয়োজনে এর পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে। আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।
সিভিল সার্জন বলেন, শুনেছি টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় একজনকে সাপে কামড় দেয়। পরে দেরিতে হাসপাতালে আনা হলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া টাঙ্গাইলে আর কাউকে সাপে কাটার খবর পাওয়া যায়নি বলে জানান।
মন্তব্য করুন