সিলেটের বিশ্বনাথে ধীরে ধীরে নামছে বন্যার পানি। পানি কমার সঙ্গে বেড়েছে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার বাসিন্দারা। শিশু, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সব বয়সি মানুষ ডায়রিয়া, জ্বর, কাশি, সর্দিসহ পানিবাহিত নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
শনিবার (২২ জুন) বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালে পুরুষ, মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে ২৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এরমধ্যে ১০ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। আর বাকিরা জ্বরে আক্রান্ত। পাশাপাশি প্রতিদিন জ্বর, ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিচ্ছেন উপজেলার বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বন্যায় রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় অনেক গ্রামাঞ্চলের রোগীদের চিকিৎসা নিতে উপজেলা সদরে আসতে পারছেন না। আবার কেউ কেউ খুব কষ্ট করে আসছেন।
জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া পৌর এলাকার বিশ্বনাথেরগাও গ্রামের আজাদ মিয়া বলেন, গত ৩-৪ দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। পরে ডায়রিয়া ও বমি শুরু হলে বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিকেলে ভর্তি হই। আজ শনিবার অনেকটা সুস্থবোধ করছি।
তিন বছরের শিশু ছামিয়াকে নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের আমতৈল গ্রামের আকলিমা বেগম। তিনি জানান, ঈদের পরের দিন থেকে তিন সন্তান-স্বামীসহ পরিবারের সবাই জ্বরে আক্রান্ত। মেয়ের জ্বর বেড়ে যাওয়ায় শুক্রবার (২১ জুন) মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (আরএমও) ডা. রাজিব বৈষ্ণব বলেন, গত দুদিন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই ডায়রিয়া ও জ্বরে আক্রান্ত। অনেকে চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। বন্যার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় অনেকে হাসপাতালের জরুরি নম্বরে ফোন দিয়েও চিকিৎসা নিয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমন বলেন, বন্যার সময় পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া, জ্বর, কাশি, সর্দির প্রকোপ বেড়ে যায়। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে এ রোগগুলোর প্রকোপ আরও বাড়বে। এজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, বন্যার সময়ে স্বাস্থ্যসেবা দিতে ৮টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। তারা প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছেন। পাশাপাশি সবাইকে খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন