শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৪, ০৩:১০ পিএম
আপডেট : ২২ জুন ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আ.লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র রাজশাহী, আহত অর্ধশতাধিক

আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে রাজশাহীর বাঘা উপজেলা রণক্ষেত্র। ছবি : কালবেলা
আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে রাজশাহীর বাঘা উপজেলা রণক্ষেত্র। ছবি : কালবেলা

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (২২ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে বাঘায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টার বাঘা উপজেলার সচেতন নাগরিকের ব্যানারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাভলু এবং বাঘা পৌর মেয়র আক্কাছ আলীর কর্মী সমর্থকরা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে।

অপরদিকে, একই দিনে বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে মানববন্ধনের ডাক দেয় বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগ।

মানববন্ধনের ডাক দেওয়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্থানীয় এমপি শাহরিয়ার আলমের অনুসারী বলে জানা গেছে। সকালে এই দুপক্ষের কর্মী-সমর্থকরা উপজেলা চত্বরে জড়ো হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা উপজেলা চত্বরের দুই প্রান্তে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুরো এলাকার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হন।

সংঘর্ষের ঘটনায় আহত কয়েকজন হলেন, বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবলু, আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শফিউর রহমান শফি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ ইনু) কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য ও জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউর রহমান শফি, পাকুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম, আবদুল খালেক, জারমান আলী, আশিক হোসেন, সুলতান আলী, ফিরোজ হোসেন, শাহাদত হোসেন, ইশতিয়াক হোসেন, কামাল হোসেনসহ অনন্ত ৫০ জন। তাদের উদ্ধার করে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পথচারী উজ্জ্বল হোসেন নামে এক ব্যক্তি পুলিশের টিয়ারশেলে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া আশরাফুল ইসলাম বাবুল ও চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ দুজনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় বাঘা বাজার এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সংঘর্ষের ঘটনায় আর যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সেজন্য ঘটনাস্থল ও এর আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিএইচএ ডা. আসাদুজ্জামান বলেন, এখানে ১৮ জন ভর্তি হয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আরও অনেকেই বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। আর যারা ভর্তি রয়েছেন তাদের চিকিৎসা চলছে।

এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে অনেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এ ছাড়া বাবুলকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

লায়েব উদ্দিন লাভলু ও আক্কাছ আলীর পক্ষে পাকুড়িয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ বলেন, কয়েক বছর ধরে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি-সম্পাদক অতিরিক্ত টাকা নিয়ে ক্রেতার দলিল সম্পূর্ণ করতেন। এ নিয়ে সমিতি ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান কমিটি পেশিশক্তি ব্যবহার করে সমিতির কাজকর্ম চালাতে চাই। আমরা এ সমিতির নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধ ও অবৈধ কমিটি বাতিল এবং অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভের আয়োজন করা হলে তারা আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমাদের পক্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহেদ সাদেক কবীর বলেন, কিছুদিন হলো শাহিনুর রহমান পিন্টুকে সাবরেজিস্ট্রার অফিসের দলিল লেখক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন। আগে তারাই সমিতি কীভাবে চালাতেন, ভালো বলতে পারবেন। তবে সমিতির নিয়মের বাইরে সাবেক সভাপতি চলতে চান। এ নিয়ে একটি পক্ষ মিছিল করার নামে আমাদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে হামলা চালিয়ে পণ্ড করে দেওয়া হয়েছে।

রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল আলম জানায়, দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে পুলিশকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে কিনা বা কতজন আহত হয়েছে এ তথ্য এখনো জানা নাই। পরে আপডেট পেলে জানানো হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নরসিংদীতে বিদ্যুৎস্পর্শে যুবকের মৃত্যু

বিএনপি নেতাকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারধর

২৫ ঘণ্টা পর ৬৮ জেলে উদ্ধার

ডিটেনশন আইনে কারাগারে মডেল মেঘনা আলম

মানিকগঞ্জে ‘সিঙ্গেল ইউজড প্লাস্টিক ও শব্দদূষণ’ বিষয়ক কর্মশালা

বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫ দেশের অর্থনীতিতে মাইলফলক : জামায়াত

কিডনির পাথর অপসারণ বিষয়ে ডা. রফিকের আধুনিক চিকিৎসার প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন

মডেল মেঘনা আলমকে ‘দরজা ভেঙে’ কারা নিয়ে গেল

বিনিয়োগ সম্মেলনে স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি ও পানিসম্পদ খাতে ৫ সমঝোতা স্মারক সই

চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যা, ১১ আসামির জামিন খারিজ

১০

ফেনীতে ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২

১১

চুরির পর ইমামের মোবাইল ফিরিয়ে দিল চোর

১২

ইসরায়েলি নৃশংসতার প্রতিবাদে খুলনায় বিএনপির র‌্যালিতে নেতাকর্মীদের ঢল

১৩

৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পেছাচ্ছে

১৪

সাঁতার-অ্যাথলেটিকসে বিদেশি কোচের প্রত্যাশা

১৫

সিলেটে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় তিন মামলায় আসামি ১৮০০

১৬

‘উন্নয়ন কাজে কাউকে এক পয়সাও চাঁদা দিতে হবে না’

১৭

কৃষক দল মাগুরা জেলা শাখার সভাপতি হলেন রুবাইয়াত

১৮

সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্নাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

১৯

সিলেটে প্রথম দিনে অনুপস্থিত ৮৭৮ এসএসসি পরীক্ষার্থী

২০
X