পাবনার সুজানগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
শুক্রবার (২১ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এর আগে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার রানিনগর ইউনিয়নের রানিনগর ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবলীগ নেতার নাম আল আমিন মিয়া (৩৮)। তিনি রানিনগর ইউনিয়নের মৃত শহিদুর রহমান মিয়ার ছেলে। তিনি রানিনগর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ মে সুজানগর উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব ও সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহীনের সমর্থকদের মধ্যে রানীনগরে বেশ কিছুদিন ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর আগে কয়েকবার তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
এরই সূত্র ধরে আজ বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে যুবলীগ নেতা (শাহীনুজ্জামান শাহীন গ্রুপের) আল আমিন আত্মীয় বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে আসছিল। রানিনগর ক্লাবের সামনে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। স্থানীয়রা গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করলে মাঝপথে গিয়ে মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সুজানগর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সরদার রাজু আহমেদ বলেন, সে রানিনগর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য। তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
আমিনপুর থানার ওসি হারুন অর রশিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলতে পারব। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. মাসুদ আলম বলেন, সুজানগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে পূর্ব থেকেই ওই এলাকায় অস্থিরতা বিরাজ করছে। এরই সূত্র ধরে আজ তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। মারা যাওয়া ব্যক্তির মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছেন। আমরা ঘটনা সঠিকভাবে তদন্ত করছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমরাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে যাচ্ছি।
মন্তব্য করুন