দিনাজপুরে আলোচিত ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট আনিকা তাসনিম সরকার তিশা ওরফে মোছা. আঞ্জুমান আরা আজমেরি (৩০)-কে সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে স্থানীয় জনগণ তাদের আটক করে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দেয়। সেখান থেকে কল পেয়ে বুধবার (১৯ জুন) তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আনিকা তাসনিম সরকার তিশা ওরফে মোছা. আঞ্জুমান আরা আজমেরি গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পরিচয় দেওয়ার কারণে এর আগেও তিনি একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছেন।
মানুষের সঙ্গে বারবার প্রতারণার কারণে বাবার পরিবার থেকেও তার সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার আনিকা তাসনিম সরকার তিশা ওরফে মোছা. আঞ্জুমান আরা আজমেরি দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা শহরের কাটাবাড়ি মহল্লার বাসিন্দা সাবেক মেয়র শাহজাহান আলি সরকারের মেয়ে এবং সিলেট কারাগারের কারারক্ষী মো. আব্দুল মান্নানের তালকপ্রাপ্ত স্ত্রী। বর্তমানে তিনি ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে রোকেয়া ছাত্রী নিবাসে বসবাস করেন। তার সহযোগী সদর উপজেলার ঘুঘুডাঙ্গা মিস্ত্রিপাড়া জিন্নাহ কাব পাড়ার তরিকুল ইসলামের ছেলে শাহাদত হোসেন (২৪)-কেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, বাদী আল আমিনকে দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেয়। পরে তিনি জানতে পারেন, আনিকা তাসনিম সরকার তিশা ওরফে মোছা. আঞ্জুমান আরা আজমেরি একজন ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি বিভিন্ন সময় মানুষের সঙ্গে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা করেন। বুধবার সকালে তিনি জানতে পারেন, ওই ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট তার সহযোগী শাহাদত হোসেনের বাড়িতে অস্থান করছে। এ সময় তিনি স্থানীয়দের জানালে স্থানীয়রা বাড়িটি ঘেরাও করে রেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দেয়। সেখান থেকে পুলিশ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট আনিকা তাসনিম সরকার তিশা ওরফে মোছা. আঞ্জুমান আরা আজমেরি ও তার সহযোগী শাহাদত হোসেনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন।
পুলিশ আরও জানায়, স্থানীয়দের সামনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসামিরা জানায়, জনৈক জুয়েলের কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকা, সুমন আলীর কাছ থেকে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, মোছা. রীনা খাতুনের কাছ থেকে ৯০ হাজার টাকা, ইমতিয়াজ আলীর কাছ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা, রাজু বাবুর কাছ থেকে ৮৫ হাজার টাকা, সুয়েজ ইসলামের কাছ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ও বাদী আল আমিনের কাছ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ মোট ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে নিয়েছেন।
এ ছাড়াও তিনি একই অপরাধে গত বছরের ১৬ জানুয়ারি দিনাজপুরে, তারও আগে যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এটাকেই পেশা হিসেবে নিয়েছেন তিনি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জিন্নাহ আল মামুন বিষয়গুলো নিশ্চিত করে জানান, গ্রেপ্তারদের কোর্টে চালান দেওয়া হলে বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন। আসামিদের রিমান্ড চাওয়া হবে।
মন্তব্য করুন