ভারতের উত্তর সিকিমে ভারি বর্ষণসহ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করা শুরু করেছে। আর এতে নদ-নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এ ছাড়া আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
নীলফামারীর ডিমলা অঞ্চলের তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে পাউবো কর্তৃপক্ষ। তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা বন্যার আশঙ্কা করছেন। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে।
বুধবার (১৯ জুন) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। (স্বাভাবিক পানির প্রবাহ ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। এর আগে সকাল ৬ টায় তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে ৫১ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। বর্তমানে রাত ৯ টায় সময় ৫২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপদ সীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপরে।
তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখরিবাড়ি, টেপাখরিবাড়ি, গয়াবাড়ি, খলিশা চাপানি, ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বসতবাড়ি ও রাস্তা-ঘাট পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এতে প্রায় ২ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়িতে পানি উঠে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড় সিংহেশ্বর, খগাখরিবাড়ি ইউনিয়নের দোহল পাড়া, টেপাখরিবাড়ি ইউনিয়নের চর খড়িবাড়ি, খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছোটখাতা, বাইশ পুকুর, ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের কেল্লাপাড়ার তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে।
কেল্লাপাড়ার হামিদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে তিস্তা পানি বৃদ্ধি পেয়ে চর এলাকার বসতবাড়ি ও চলাচলের রাস্তা ডুবে গেছে। পরিবারগুলো ঘর থেকে বের হতে পারছে না।
খালিশা চাপানি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান বলেন, সকালে থেকে বাইশপুকুর গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। আর এতে ওই ওয়ার্ডের প্রায় শতাধিক পরিবারের ঘর বাড়িতে পানি প্রবেশ করে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, গজলডোবায় পানি ছেড়ে দেওয়ার কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।
মন্তব্য করুন