ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে দুই দিনে সাভার বিসিক চামড়া শিল্পনগরীতে ৪ লাখ ৬০ হাজারের বেশি কাঁচা চামড়া ঢুকেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১৭ জুন) দুপুরের দিক থেকে সাভারের হেমায়েতপুরের হরিণধরা এলাকায় অবস্থিত চামড়া শিল্পনগরীতে কোরবানির পশুর চামড়া ঢুকতে শুরু করে।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) বিকেল পর্যন্ত সাভার চামড়া শিল্পনগরীতে ৪ লাখ ৬০ হাজার ও পোস্তায় দেড় লাখের মতো চামড়া ঢুকেছে বলে জানা গেছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার ভৌমিক।
মঙ্গলবার বিকেলের দিকে চামড়া শিল্পনগরী ঘুরে দেখা গেছে, চামড়াবাহী ট্রাক ঢুকছে শিল্পনগরীতে। আর ট্যানারিগুলোতে চলছে কর্মব্যস্ততা। কাঁচা চামড়ায় লবন মাখাচ্ছেন অনেকেই। থরে থরে সাজিয়ে রাখা হচ্ছে এসব লবন মাখানো চামড়া।
সাজেদুল হক নামে এক ট্যানারি শ্রমিক বলেন, গতকাল থেকেই চামড়া আসার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো পরিস্কার করে লবন মাখাচ্ছি।
ট্যানারি মালিকরা জানান, সোমবার দুপুরের দিক থেকেই বিভিন্ন মাদ্রাসা ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নিয়ে আসা শুরু করেন।
সাভার চামড়া শিল্পনগরীতে অবস্থিত আজমির লেদারের মালিক মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘এখানে লবন ছাড়া কাঁচা চামড়া ঢুকছে। এগুলো লবন দিয়ে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এভাবে অন্তত দুই আড়াই মাস রাখা যাবে। আমরা সরাসরি মাদ্রাসা থেকে চামড়া কিনছি। আগেই কথা বলা ছিল। সেগুলোই নিচ্ছি। সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, লবন যুক্ত চামড়া ১২০০ টাকা করে। লবন মাখাতে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা লাগে। এই খরচ বাদ দিয়ে কাঁচা চামড়া কেনা হচ্ছে।’
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও সালমা ট্যানারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ‘ঈদের দিন ও আজ যে পরিমাণ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তার বেশিরভাগই পূরণ হয়েছে। সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া সংগ্রহ করা হচ্ছে। আশা করছি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।’
চামড়া শিল্পনগরীর প্রস্তুতির বিষয়ে সাভারের বিসিক চামড়া শিল্পনগরীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান রিজোয়ান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার লাখ চামড়া ঢুকেছে ট্যানারিতে। আরও চামড়া ঢোকার সম্ভাবনা আছে।’
বিসিক চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, ‘সর্বশেষ আমাদের সাভার ট্যানারিতে ৪ লাখ ৬০ হাজার পিস চামড়া প্রবেশ করছে। এবার সারাদেশের রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদন হয়েছে। আমরা প্রান্তিক পর্যায়ে প্রত্যেক জেলায় ডিলারের মাধ্যমে পর্যাপ্ত লবণ সরবরাহ করার ব্যবস্থা করেছি এবং লবণের মূল্য গতবারের চেয়ে কেজিতে দুই টাকা করে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত সারাদেশে কোথাও লবণ সংকটে পড়েছে আমরা এরকম রিপোর্ট পাইনি। চামড়ার মূল্যের বিষয়টা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নির্ধারণ করে। এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো ঘটনার খবর পাইনি।’
মন্তব্য করুন