চলতি বছর আরও এক দফা কোরবানির পশুর চামড়া বাড়িয়েছে সরকার। এমন ঘোষণায় ট্যানারি ব্যবসায়ীদের মাঝে জ্বলেছে আশার আলো। যদিও মাথায় হাত বেশি লাভবানের আশায় থাকা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের।
কোরবানির প্রথম দিনে সন্ধ্যা নামার আগ মুহূর্তে চামড়ার দর ভালো ছিল। সে সময় অনেকে চামড়া বিক্রি করে হয়েছেন লাভবান। আর যারা আরও একটু বেশি লাভের আশায় ধরে রেখেছেন তাদের মাথায় হাত।
সন্ধ্যার পর হয় চামড়ার দরপতন। দিনে চামড়ার দরের সঙ্গে রাতের দর ফারাক। বন্দর নগরী চট্টগ্রামের অন্যতম চামড়ার বাজার শেখ মুজিব রোড চৌমুহনী থেকে এ তথ্য জানা যায়।
সোমবার (১৭ জুন) রাত ১২টায় সংশ্লিষ্টরা কালবেলাকে জানান, বিকেল ৪টা পর্যন্ত চামড়ার দর ভালো ছিল। সন্ধ্যার পর থেকে দরপতন। অনেকের মাথায় হাত। দিনে চামড়া কিনেছে অনেক পার্টি।
মৌসুমি ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন কালবেলাকে জানান, লাভের ওপর টাকা নিয়ে চামড়ার ব্যবসায় নেমেছি। যে দামে কিনেছি এখন লাভ তো দূরের আশা পুঁজিও হারাতে হবে।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) সরেজমিনে দেখা গেছে, চৌমুহনীতে ভোর ৫টার সময়ও হাহাকার চামড়া ব্যবসায়ীদের। এমন পরিস্থিতিতে লোকসানে বিক্রি করেছেন অনেকে। আবার বাকিতেও। লবণ না দেওয়ায় বের হচ্ছে দুর্গন্ধ। ভারি হচ্ছে পরিবেশ। দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাকে চামড়া তুলছে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। সেখানে ছিল প্রায় চারশর মতো চামড়া।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতি লিমিটেড এবার তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহের টার্গেট নির্ধারণ করেছে। তবে পুরো চট্টগ্রামে কী পরিমাণ চামড়া সংগ্রহ হয়েছে, তা জানাতে আরও কমপক্ষে একদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে আড়তদার সমিতি। গত বছর তারা ৩ লাখ ৪২ হাজার কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেছিল।
এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা না থাকলেও সরকারি দাম মেনে চামড়া সংগ্রহ এখন আড়তদারদের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বলছেন, একদিকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দর দিচ্ছেন কোরবানিদাতাদের, যে দামে তাদের কেনা সম্ভব নয়। অন্যদিকে ট্যানারি মালিকদের বিভিন্ন কারসাজির কারণে তারা লোকসানের আশঙ্কা করছেন।
এদিকে চামড়ার দরপতনে ট্যানারি ব্যবসায়ীরা কলকাঠি নাড়াচ্ছেন বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। জামাল উদ্দীন নাম এক ব্যবসায়ী কালবেলাকে বলেন, ৬০০ টাকার চামড়া দর করে ২০০ টাকা। সরকার এ বছর চামড়ার দর আরও একধাপ বাড়াল।অপরদিকে গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশ নাকি এবারও চামড়ার বাজারে সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়েছে। তা হলে চামড়ার বাজার দরের এই অবস্থা কেন?
তবে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের এমন অভিযোগ মানতে নারাজ গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশ। ওই কমিটির মিডিয়া পার্সন সাবের আহমেদ কালবেলাকে বলেন, চামড়ার বাজারে আমাদের কোনো হাত নেই। আমরা আঞ্জুমানের জন্য এক লাখ চামড়া কালেকশন করি। আঞ্জুমানের একটি ট্যানারির অধীনে চামড়াগুলো কালেকশন করা হয়। আঞ্জুমানের ভক্ত আশেকবৃন্দরা মূলত ওই চামড়ার জোগান দেন। উপজেলা থেকেও চামড়া সংগ্রহ করা হয়।
মন্তব্য করুন