রেল কতৃর্পক্ষের চোখ রাঙানি কিংবা র্যাবের অভিযান কোনো কিছুতেই যেন দমছে না চট্টগ্রামের ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জালে ধরা পড়ার পর ছাড়া পেয়ে টিকিট কালোবাজারিরা ফের ফিরছেন স্টেশনে, নিয়ন্ত্রণ করছেন টিকিটের ব্ল্যাক মার্কেট।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাবের অভিযানে ধরা পড়ার দুই বছর পর এবার পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের টিকিট কালোবাজারি মজনু। এ সময় আনসার বাহিনীর এক সদস্যসহ মোট তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে দিকে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে তাদের আটক করা হয়। আটকরা হলেন, আনসার সদস্য মো. স্বপন, মো. মজনু ও মো. রুবেল। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন রুটের ট্রেনের ৯টি টিকিট উদ্ধার করা হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, মূলত গত অর্ধযুগ ধরে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের টিকিট কালোবাজারি চক্র নিয়ন্ত্রণ করছে মজনু মিয়া। একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জালেও ধরা পড়েছেন। মূলত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) এবং আনসার বাহিনীর কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত স্টাফ ও ভাড়ায় খাটানো লোকবল নিয়ে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারে চড়া দামে বিক্রি করেন মজনু।
২০২২ সালের জুলাইতে মজনুসহ চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের ব্ল্যাকারদের একটি অংশ ধরা পড়ে র্যাবের জালে। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে স্টেশন ছাড়েন কালোবাজারিরা। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে আবারও চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে ফিরে এসে ট্রেনের টিকিটের কালোবাজার নিয়ন্ত্রণে নেন মজনু মিয়া। এবার রেলওয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে মজনুসহ ৩ টিকিট কালোবাজারি।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে রেলওয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, মজনু চিহ্নিত টিকিট কালোবাজারি। টিকিট কালোবাজারিদের ১৫ জনের একটি তালিকা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে স্টেশনে সাঁড়াশি অভিযানের পর অনেকেই স্টেশন ছেড়েছেন। মজনুও দীর্ঘদিন ছিলেন না। তবে কোরবানিকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি সময়ে সে আবারও ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি শুরু করে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মো. রুবেল নামের তার এক সহযোগীসহ তাকে আটক করা হয়েছে।
ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিতে রেলওরে স্টাফদের জড়িত থাকার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ২০২২ সালে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের ৯টি টিকিটসহ আরএনবির হাবিলদার মো. রবিউল ইসলামকে আটক করেছিল র্যাব। অভিযোগ রয়েছে ছাড়া পেয়ে আটকরা ফের চালাচ্ছেন কালোবাজারি চক্র। এতে ঈদযাত্রায় দুর্ভোগ বাড়ছে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি এস এম শহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, টিকিট কালোবাজারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে মজনুসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। মজনুর বিরুদ্ধে আগেও বিভিন্ন অভিযোগ ছিল। আটকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। টিকিট কালোবাজারি রুখতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই অভিযান চলমান থাকবে।
মন্তব্য করুন