কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে চলাচল করা ট্রলার ও স্পিডবোটে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে গুলি ছোড়ায় কোনো নৌযান সেন্টমার্টিনে যেতে পারছে না। এ অবস্থায় গত কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর বিকল্প পথে ঝুঁকি নিয়ে তিনটি ট্রলারে করে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে ফিরছে দুই শতাধিক হোটেল কর্মী, শ্রমিক ও বিভিন্ন কাজে গিয়ে আটকাপড়া দুই শতাধিক মানুষ।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুর ১টার দিকে সেন্টমার্টিন জেটি ঘাট থেকে ট্রলার তিনটি টেকনাফের উদ্দেশে রওনা দেয়। অন্যদিকে গোলাগুলি অব্যাহত থাকায় সেন্টমার্টিনবাসীর জন্য জেলা প্রশাসনের খাদ্যসামগ্রী বহনকারী নৌযান যেতে পারেনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফের ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী।
আদনান চৌধুরী বলেন, দুপুর ১টার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের জেটি ঘাট থেকে ৩টি ট্রলার যোগে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যদের নিরাপত্তায় অন্তত তিন শতাধিক মানুষ টেকনাফের উদ্দেশে রওনা দেয়। বিকেল ৩টার দিকে ট্রলারগুলো টেকনাফের মুন্ডারডেইল সাগর উপকূলে পৌঁছে। কিন্তু সাগরের প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে এসব ট্রলার থেকে লোকজনকে সরাসরি তীরে ওঠানো সম্ভব হচ্ছিল না। পরে কূল থেকে কয়েকটি ডিঙ্গি নৌকা উপকূলের কিছুদূরে সাগরে অবস্থানকারী ট্রলারগুলোর কাছে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বড় ট্রলার থেকে এসব মানুষকে ডিঙি নৌকায় তুলে তীরে নিয়ে আসা হয়েছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, গত ৭ দিন দ্বীপে আসা-যাওয়া বন্ধ থাকায় দ্বীপে খাদ্যপণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। এখন বিকল্পভাবে ট্রলার চলাচল শুরু হওয়ায় স্বস্তি মিলছে। যে ট্রলারগুলো গেছে ওই সব ট্রলার নিয়ে টেকনাফে থাকা মানুষজন (নিত্যপণ্য কেনাকাটা ও অন্যান্য কাজ সেরে) আবার ফিরে আসবে।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এক জরুরি সভায় বৃহস্পতিবার থেকে সেন্টমার্টিনে যাত্রী আসা-যাওয়া এবং পণ্যবাহী ট্রলার চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
ইউএনও আদনান জানান, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের সাগরের বিকল্পপথে যাত্রী পারাপার শুরু হলেও–পণ্যবাহী কোনো ট্রলার সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে টেকনাফ ছাড়েনি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, মূলত কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে বড় জাহাজযোগে ব্যবসায়ীরা পণ্য নিয়ে যাবেন। এটা ব্যবসায়ী এবং জাহাজ মালিকরা মিলে করবেন। প্রশাসন নিরাপত্তার বিষয়টি দেখবেন। এ ছাড়া, বঙ্গোপসাগর হয়ে এখন ট্রলারে যেসব যাত্রী আসা-যাওয়া করছে, তাদেরও ওখানে কিছু পণ্য নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফলে খাদ্য সংকট হবে না।
এদিকে টেকনাফের নাফনদীর সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের উপকূলের কাছে টানা ২ দিন ধরে দেখা যাচ্ছে বড় একটি যুদ্ধজাহাজ। এই জাহাজ থেকে মিয়ানমারের স্থলেভাগে অবস্থানকারী বিদ্রোহীদের সঙ্গে বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত চলছে গোলাগুলি। বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে টেকনাফের সীমান্তবর্তী এলাকায়।
মন্তব্য করুন