লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাশেদ জামান বিলাশের বিরুদ্ধে গরু ব্যবসায়ীকে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক পিটিয়ে আড়াই লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তার সহযোগী ছিলেন ৬ জন ছাত্রলীগ নেতা। সোমবার (১০ জুন) রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী গরু ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী (৪৮)।
আইয়ুব আলী জেলার আদিতমারীর ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের তালুক দুলালী গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গরু ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী রোববার (৯ জুন) দুপুরে লালমনিরহাট আদালতে হাজিরা দিয়ে বের হওয়ার সময় ৩টি মোটরসাইকেলযোগে ছাত্রলীগের ৫ জন নেতাকর্মী গিয়ে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বিলাশের কথা বলে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। তারা প্রথমে লালমনিরহাট জেলা শহরের লাশ কাটা ঘরের নির্জন এলাকায় নিয়ে গরু ব্যবসায়ীকে বেধড়ক মারধর করে। এ সময় মারধর থেকে বাঁচতে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বিলাশের পা ধরেও রক্ষা পাননি ওই ব্যবসায়ী। পরে তার পকেটে থাকা ২০ হাজার টাকা কেড়ে নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আরও জানা যায়, এরপর বিজিবি ক্যান্টিন মোড়ে ছাত্রলীগ জেলা সভাপতি বিলাশের ব্যাক্তিগত চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে তার হাত-পা বেঁধে পুনরায় আরেক দফা মারধর করে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। অবশেষে তা আড়াই লাখে সমাধান হয়। পরে গরু ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী তার স্ত্রীকে ফোন করলে বিকেলের দিকে ব্যবসার পুঁজি ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা এনে দিলে ছাত্রলীগের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি মেলে ওই গরু ব্যবসায়ীর। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা বা কাউকে বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় তাকে।
তিনি অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, পরে গরু ব্যবসার পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব প্রায় ভুক্তভোগী আইয়ুব ন্যায়বিচার চেয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ জামান বিলাশকে প্রধান করে ছাত্রলীগের আরও ৬ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে সোমবার লালমনিরহাট সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অন্য অভিযুক্তরা হলেন, সৌরভ টেরা, রায়হান, রব্বানী, বাবু ও তুষার। তারা সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও বিলাশের সঙ্গী।
আইয়ুব আলী বলেন, মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে বিলাশের কাছে পৌঁছেই বেধড়ক মারধর শুরু করে। যেভাবে নির্যাতন করেছে তা বর্ণনা দেওয়ার মতো নয়। হাতে পায়ে ধরেও রক্ষা পাইনি। অবশেষে জান বাঁচাতে তাদের চাহিদা মতো আড়াই লাখ টাকা বুঝে দিয়ে বিকেলে মুক্তি পাই। দিনভর তাদের হাতে আটকা ছিলাম। বিলাশের ধারণা আমি ভারতীয় গরুর ব্যবসা করি। তাই তার হিস্যার জন্য চাঁদা দাবি করেছে। আমি এর ন্যায় বিচার চাই।
লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ জামান বিলাশের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ জামান বিলাশ জড়িত নয়। কেউ যদি ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কোনো অপরাধ করে তার দায় তো ছাত্রলীগ নেবে না।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি ওমর ফারুক বলেন, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাশেদ জামান বিলাশসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন