কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৪, ০৭:১১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘নিজের পাকা বাড়ি হইব স্বপ্নেও ভাবি নাই’

বাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠান। ছবি : কালবেলা
বাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠান। ছবি : কালবেলা

স্বপ্নেও ভাবি নাই, নিজের পাকা বাড়ি হইব। সবকিছু স্বপ্ন লাগতেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ঘর পেয়ে কথাগুলো বলছিলেন কালীগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা বৃদ্ধা বেলী বেগম।

মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসেবে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে পাকা বাড়িঘর পেলেন ৮৭৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এমন উপহার পেয়ে আবেগে আপ্লুত ও উচ্ছ্বসিত হয়েছেন এসব পরিবারের মানুষরা।

মঙ্গলবার (১১ জুন) বেলা ১১টা সারা দেশে একযোগে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব বাড়ি হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেউ দোকানদারি করছেন, কেউবা শাকসবজি চাষ, আবার কেউ ঋণ নিয়ে শুরু করেছেন ব্যবসা।

কালীগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের মুখে মুখে দিন বদলের গল্প। জাহেদা আক্তার বলেন, আগে আমরা ভাড়া বাসায় থাকতাম, এখন স্থায়ী ঠিকানা পেয়েছি। নিজেদের বাড়িতে বসবাস করছি। মেয়েরা পড়াশোনা করছে। আগে অনেক খারাপ অবস্থা ছিল। এখন বাচ্চাদের নিয়ে ঘরে থাকতে পারছি। নিজের একটু জায়গা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে। মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা আয় করি। নিজের জমি নেই, অন্যের জমিতে থাকতে হতো। ছনের ঘরে দুর্বিষহ কেটেছে ৪০ বছর।

কমলা বেগম লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের কাকিনা ইউনিয়নের মহিষামুড়ি বাজার এলাকায় নির্মিত আশ্রয়ণের বাসিন্দা। তিনি জানান, দিনমজুর বাবার সংসারেও অভাবের মাঝে বড় হয়েছি।

বাধ্য হয়ে অন্যের জমিতে দিনমজুরি করে সচল রেখেছেন চার সদস্যের পরিবারের চাকা। জীবনভর হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে পেটের ভাত ছাড়া জোগাড় করা ছাড়া কোনো সম্পদ বা বাড়ি করতে পারেননি এই দম্পতি। অবশেষে ভূমিহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পেয়ে বেজায় খুশি বেলী দম্পতি।

জমি আর পাকা বাড়ি পেয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, পরিশ্রম করে শরীরের রক্ত পানি করেও একখণ্ড জমি কিনতে পারি নাই। এখন শেখের বেটি হাসিনা হামাক জমিসহ পাকা বাড়ির মালিক করে দেছে বাহে। আল্লায় শেখের বেটিকে ম্যালা (অনেক) দিন বাঁচি রাখুক। হামরা নামাজে বসে প্রতিদিন দোয়া করি তার জন্য।

একই আশ্রয়ণে জমিসহ পাকা বাড়ি পেয়েছেন ষাটোর্ধ্ব দম্পতি সাইফুল ইসলাম। এক সময় তাদের নিজের জমিসহ পাকা বাড়ি ছিল। কিন্তু ব্যবসায় লোকসানে পড়ে ছেলে সেই বাড়ি বিক্রি করে দেন। এরপর তাদের ঠাঁই হয় অন্যের বাড়িতে। দীর্ঘ কয়েক বছর অন্যের বাড়িতে আশ্রয়ে ছিলেন এ বৃদ্ধ দম্পতি। ভূমিহীন ও গৃহহীন হিসেবে তারাও পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের দুই শতাংশ জমিসহ পাকা বাড়ি।

এই দম্পতি বলেন, ব্যবসায়িক লোকসানে বাড়ি-গাড়ি বিক্রি করে পথে বসে গেছিলাম। হতাশায় ডুবে ছিলাম। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে আবার মাথাগোজার ঠাঁই পাইলাম। ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তিও পাইলাম আমরা।

এ উপজেলার আটটি ইউনিয়নে খাসজমি উদ্ধার করে ১৯১৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে গৃহনির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, লালমনিরহাট ৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. মতিয়ার রহমান, লালমনিরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহম্মেদ, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন, রেঞ্জ ডিআইজি আবদুল বাতেন, ইউএনও জহির ইমাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম প্রমুখ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইসরায়েলকে প্রতিশোধের রাস্তা দেখিয়ে দিলেন ট্রাম্প

মসজিদ টার্গেট করে চালানো হচ্ছে বিমান হামলা

আর এক জয় দূরে মেসির মায়ামি!

নির্যাতনের তথ্য চেয়ে আ.লীগের বিশেষ বার্তা

পূজায় বুড়িমারীতে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে ৬ দিন

প্রতি সপ্তাহে সহায়তা দেবে জুলাই ফাউন্ডেশন : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

আন্দোলনে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি, সেই যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করছে যমুনা গ্রুপ

জনবল নেবে স্যামসাং বয়সসীমা  ২১ থেকে ২৮ বছর 

বায়ুদূষণে শীর্ষে হ্যানয়, ঢাকার খবর কী

১০

সুস্থ থাকতে ভাত নাকি রুটি, কী বলছেন চিকিৎসক

১১

লিটনের শরীরে ৫ শতাধিক বুলেট

১২

সপ্তম রাউন্ডে জমে উঠেছে প্রিমিয়ার লিগের লড়াই

১৩

পাচারের টাকায় আমিরাতে মিনি সিটি নিয়ে আসিফের স্ট্যাটাস

১৪

শেরপুরে ভয়াবহ বন্যায় ৭ জনের মৃত্যু

১৫

তিন বিভাগে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস গবেষকের

১৬

সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার আক্ষেপ জ্যোতির

১৭

১৩ জেলায় দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা

১৮

ভারতীয় দলে আচমকা পরিবর্তন

১৯

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ২৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

২০
X