আতিকুর রহমান, কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ জুন ২০২৪, ০৪:০৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শান মেশিনের প্যাডেলে চলে ষাটোর্ধ মোহাম্মদ আলীর সংসার

ছুরি শান দিচ্ছেন শান কারিগর মোহাম্মদ আলী। ছবি : কালবেলা
ছুরি শান দিচ্ছেন শান কারিগর মোহাম্মদ আলী। ছবি : কালবেলা

দরজায় কড়া নাড়ছে কোরবানির ঈদ। আর কোরবানির ঈদ মানেই মাংস কাটাকাটির মহোৎসব। তাই এ সময় পুরোনো বঁটি, চাকু কিংবা দা আগে থেকে ধার বা শান দিয়ে ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হয়।

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে এ পেশায় নিয়োজিত কারিগরদের। বিশেষ করে কাঁধে শান মেশিন নিয়ে শহরের অলিতে গলিতে হাঁক দিতে দেখা যাচ্ছে শান কারিগরদের।

ভ্রাম্যমাণ এ সকল কারিগররা শান মেশিন কাঁধে চেপে ঘুরে বেড়ায় প্রতিটি পাড়া মহল্লায় ও হাট বাজারে। এভাবে কাঁধে শান মেশিন চেপে ৩৮ বছর ধরে শান দেওয়ার কাজ করে সংসার চালিয়ে আসছেন ষাটোর্ধ বয়সী মোহাম্মদ আলী।

সরেজমিনে দেখা যায়, মোহাম্মদ আলী শান দেওয়া মেশিনের প্যাডেল পা দিয়ে সজোরে ঘুরিয়ে শান দিচ্ছে। এতে একটি পাথরের প্লেট সজোরে ঘুরাতে হচ্ছে তাকে। ঘূর্ণায়মান ওই পাথরের প্লেটের কার্নিশে লোহার চাকু, দা ও কাঁচি স্পর্শ করলে ঘর্ষণে ধার উঠে যায়। এ সময় ঘর্ষণের ফলে আগুনের ফুলকিও বের হয়। এভাবে দুই পায়ে প্যাডেল ঘোরানোর কাজ খুবই পরিশ্রমের।

শান কারিগর মোহাম্মদ আলী কালবেলাকে বলেন, এ শান মেশিনে প্রতিটি পাড়া মহল্লায় এবং বিভিন্ন হাট বাজারে ঘুরে শান দেওয়ার কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়েই কষ্টে চলে পরিবারের ভরণপোষণ। পাঁচজনের পরিবারে নেই মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও। তাই হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলা থেকে এসে আবাস গড়েছি কুমিল্লার গোমতী নদীর পাড়ে ছোট্ট ঝুপড়ি ঘরে। ২৫ বছর বয়স থেকেই একটি শান দেওয়া মেশিন কাট দিয়ে তৈরি করে শুরু করেছি মরচে ধরা পুরানো কাঁচি,দা ও চাকুতে ধার ওঠানোর কাজ।

তিনি বলেন, কোরবানির ঈদে অনেক পশু জবাই হয়। এ সময় প্রায় প্রতিটি পরিবারেই ছুরি, বঁটি, শিলপাটা ধার দেওয়ার হিড়িক পড়ে। ফলে বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে কোরবানির ঈদের আগের কয়েকদিন আয়ও ভালো হয়। অন্য সময় ৩০ টাকা নেওয়া হলেও এখন ছুরি ধার করতে ৫০ টাকা নিচ্ছি। অন্যগুলো ১০০ টাকা। কোরবানির ঈদের আগে প্রতিদিন গড়ে ১২০০ টাকার মতো আয় হয়।

এ শান কারিগর আরও বলেন, কিন্তু ঈদের পর এ আয় অর্ধেকে নেমে আসে। এ আয় দিয়েই চলছে পরিবারের ভরণপোষণ। এ বয়সে এসে শান দেওয়ার কাজ করতে ইচ্ছে করে না। অন্য কোনো কাজও জানা নেই। মরার আগ পর্যন্ত শান দেওয়ার কাজ করে বাঁচতে হবে। শরীর না কুলালেও জীবিকার তাগিদে শান দেওয়া মেশিনের প্যাডেল ঘোরাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

টমছমব্রিজ এলাকার বাসিন্দা আমিমুল এহসান বলেন, আমাদের এলাকার অনেক পরিবারের দা-বঁটি মেশিনের মাধ্যমে শান দেওয়া হয়। দা-বটি বাজারে নিতে ঝামেলা। তাই শান দেওয়া লোক বাসার সামনে আসলে তাদের কাছ থেকে দা-বঁটি শান দেই। এতে একটু ঝামেলা কম হয়। শান ওয়ালারা বঁটি শান দিতে নেন ৫০ টাকা, ছুরি ২০ টাকা, ছাপাতি ১০০ টাকা, শিলপাটা ১০০ টাকা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মধ্য মেঘনায় ড্রেজার ডুবি, নিখোঁজ ৫

বাবুল হত্যাকাণ্ড : মেয়র আক্কাস ৩ দিনের রিমান্ডে

কুয়েতে নবনিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব গ্রহণ

সিরাজগঞ্জে বন্যার পানিতে ডুবে তিন শিশু-কিশোরের মৃত্যু

বন্যার পানিতে খেলতে গিয়ে শিশুর মৃত্যু

মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ, ২ দিনেও সন্ধান মেলেনি যুবকের

৩ দিন পর করতোয়ায় ভেসে উঠল কলেজছাত্রের মরদেহ

পাচারের কথা বলে ৩ নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ

গুনে গুনে ঘুষ নেওয়া সেই মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে মামলা

ইসরায়েলকে যেভাবে প্রাণঘাতী যুদ্ধে প্রলুব্ধ করেছে হামাস

১০

কোপায় ব্যর্থতার পরও নিরাপদ ব্রাজিল কোচ

১১

রংপুরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

১২

মিরসরাইয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনে জরিমানা

১৩

কোটার বিরুদ্ধে এবার মাঠে নামছে বুয়েট শিক্ষার্থীরা

১৪

দাফনের ৮ মাস পর কবর থেকে বৃদ্ধার লাশ উত্তোলন

১৫

খুলনায় দুদি‌নের ব‌্যবধা‌নে যুবলীগের আরেক নেতা খুন

১৬

ভারি বর্ষণ হতে পারে যেসব বিভাগে

১৭

সাংবাদিকের ওপর আ.লীগ নেতার আতর্কিত হামলা

১৮

কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ

১৯

সিলেটে বন্যার মধ্যেই বৈরী পরিস্থিতিতে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু মঙ্গলবার

২০
X