বরিশালের গৌরনদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত হয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী হারিছুর রহমানের নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালিয়ে বিজয়ী চেয়ারম্যানের কর্মী-সমর্থকদের ১২টি বসতঘর ভাঙচুর করেছে।
এ সময় নারীদের শ্লীলতাহানিসহ আমিনুল ইসলাম মিরাজ মল্লিক নামের এক যুবককে কুপিয়ে মারাত্মক জখম, প্রতিবন্ধী এক তরুণীসহ বাড়ির প্রায় ১০ জন নারী-পুরুষকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। হামলাকারীরা ১৫টি মোটরসাইকেল, দুটি মিনি ট্রাক, একটি ট্রলি ভাঙচুর করেছে।
রবিবার (৯ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে গৌরনদী পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ইখতিয়ার হোসেন হাওলাদারের দিয়াশুরস্থ গ্রামের বাড়িতে এ হামলা ও ভাঙচুর চালায়।
একইরাতে হামলাকারীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খোকন মল্লিকের বাড়িতেও হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।
একইদিন সন্ধ্যায় আশোকাঠি মোল্লাবাড়ি নামক এলাকায় বসে বিজয়ী চেয়ারম্যান মনির হোসেন মিয়ার ভাইয়ের ছেলে সাবেক পৌর কাউন্সিলর গোলাম আহাদ মিয়া রাসেলকে মারধর করে আহত করেছে হারিছ বাহিনীর প্রধান ক্যাডার দেলোয়ার হাওলাদার ও সজিব হোসেন জিয়া।
অপরদিকে ওইদিন রাতেই পরাজিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান শিপ্রা রানীর বাসায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। শিপ্রা রানী অভিযোগ করে বলেন, হারিছ বাহিনীর ক্যাডাররা আমার বাসায় অগ্নিসংযোগ করেছে।
হামলায় গুরুতর আহত আমিনুল ইসলামকে বরিশাল রিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, খোকন মল্লিক ও ইখতিয়ার হাওলাদার বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যান মনির হোসেন মিয়ার একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। এ কারণে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হারিছুর রহমান তার সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে।
বিজয়ী চেয়ারম্যান মনির হোসেন মিয়ার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু বলেন, আমাকে হত্যার জন্য হারিছুর রহমান পার্শ্ববর্তী বাবুগঞ্জের ঠাকুরমল্লিক গ্রামের একসময়ের দুর্ষর্ধ সর্বহারা ও জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মালেক সিকদার ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী কিলার মাসুমকে ভাড়া করেছে।
হামলা ভাঙচুরের খবর পেয়ে রাতেই পৌর কাউন্সিলরের বাড়িতে ছুটে যান নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মনির হোসেন, সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানসহ নেতাকর্মীরা। তারা আগামী ২৪ ঘণ্টা মধ্যে সন্ত্রাসী হারিছুর রহমানসহ তার ক্যাডারদের গ্রেপ্তারের জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান।
বিজয়ী চেয়ারম্যান মনির হোসেন মিয়া বলেন, ভোটে পরাজিত হয়েই হারিছুর রহমান আমার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়ে বসতবাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করছে। তাই অনতিবিলম্বে হারিছকে গ্রেপ্তার করা না হলে গৌরনদীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হারিছুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ থাকায় কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অপরদিকে হামলা ও ভাঙচুরের খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন থানা পুলিশসহ নির্বাচনের টহলে থাকা বিজিবি সদস্যরা।
মন্তব্য করুন