মাচা পদ্ধতিতে তরমুজে চাষে ভরে গেছে পুকুর পাড়। ভালো ফলনে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। এতে তরমুজ চাষে সফলতা পেয়েছেন লালমনিরহাট কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের সুন্দ্রাহবী গ্রামের কৃষক শামসুল আলম। তার ১ একর পুকুরের পাড়ে কোন আবাদ হতো না। সেখানে এখন তিনি হলুদ তরমুজ আবাদ করেন। তার পুকুর পাড়ের মাচায় ঝুলছে শত শত তরমুজ। রবি হাইব্রিড জাতের এসব তরমুজ এখন বাজারজাতের সময় হয়েছে। একই সঙ্গে বেশি লাভের আশা করছেন তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় আদর্শ কৃষক শামসুল আলম নিজস্ব পুকুরের দুই ধারের জমিতে মাচা পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলকভাবে তৃপ্তি জাতের তরমুজ চাষ করে আশানুরূপ সফলতা অর্জন করেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের সুন্দ্রাহবী গ্রামের কৃষক শামসুল আলম চলতি মৌসুমে তার পুকুরের দুই পাড়ে তরমুজ চাষ করেছেন। তিনি তরমুজ চাষে মাচা পদ্ধতিতে ব্যবহার করেছেন। এটি মূলত চীন ও জাপানের বিষমুক্ত সবজি চাষের একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। আবহাওয়া ও মাটির উর্বরতার কারণে হলুদ, সবুজ রঙের তরমুজ হলেও এখানে কালো জাতের তরমুজও চাষ করছে কৃষকরা।
কৃষক শামসুল আলম জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে মাচা পদ্ধতিতে পুকুর পাড়ের অবশিষ্ট জমিতে ছয়টি ট্রেতে বীজ বপন করি। এতে ১০০টি তরমুজের চারা পরিপূর্ণভাবে বেড়ে ওঠে। এরপর নানা পরিচর্যায় গাছগুলোতে ফুল আসতে শুরু করে। আমার খরচ হয়েছে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা তরমুজ ৬৫ দিনের মধ্যে বিক্রির উপযোগী হয়। তরমুজের ওজন দুই থেকে তিন কেজি হবে। স্থানীয় বাজারে বারোমাসি তরমুজের ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রতি কেজি তরমুজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে। এতে ধান ও সবজি চাষের প্রায় দ্বিগুণ লাভ হতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি বলেন, স্থানীয় কৃষকদের উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়। সুন্দ্রাহবী গ্রামের কৃষক শামসুল আলম ফেরোমন ফাঁদ ও মাচা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করায় ফলন হবে বিষমুক্ত। আশা করছি মাচা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ এ এলাকায় আরও সম্প্রসারিত হবে। শামসুল আলমকে বিনামূল্যে সার ও বীজসহ সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। তরমুজ চাষের এ প্রযুক্তি আগামীতে আরও সম্প্রসারিত হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
মন্তব্য করুন