বাংলাদেশে এপ্রিল-জুন মাস পর্যন্ত কৃষ্ণচূড়া গাছে চোখধাঁধানো লাল টকটকে উজ্জ্বল কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখা যায়। সৈন্দর্যবর্ধনকারী কৃষ্ণচূড়া ফুলের রূপ দেখে মুগ্ধ হয় মানুষ। পথের ধারে সবুজ পাতার ফাঁকে যখন আগুন রঙের কৃষ্ণচূড়া উঁকি মারে তখন বিস্মিত হন সৌন্দর্যপ্রিয় মানুষ। উপভোগ করছেন কৃষ্ণচূড়ার অপার সৈন্দর্য। চলার পথে কেউ ছবি তোলেন কেউবা কৃষ্ণচূড়া গাছের পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলেনিক্স রেজিয়া। এটি ফ্যাবেসি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। উচ্চতায় সাধারণত দশ-বারো মিটার পর্যন্ত হয়। চার দিকে ছড়িয়ে পরা শাখা-প্রশাখা ছায়া দানের বেশ উপযোগী। কৃষ্ণচূড়া গাছ উষ্ণ আবহাওয়া ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু। বাংলাদেশ, ভারত, আফ্রিকা, তাইওয়ান, হংকং, ক্যারাবিয়ান অঞ্চলসহ অনেক দেশে দেখা যায়। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে কৃষ্ণচূড়া ফুল ফোটে।
পাবনার চাটমোহরের বিভিন্ন পথঘাটের পাশে দেখা মিলেছে কৃষ্ণচূড়া ফুলের। আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবের মাঝেও চিরচেনা নিয়মে কৃষ্ণচূড়া সৈন্দর্য বিলিয়ে মানুষকে করেছে অভিভূত। পথিকের অবসন্ন মনকে ক্ষণিকের জন্য হলেও দোলা দিয়ে যাচ্ছে।
চাটমোহরের পথ ঘাটের পাশে, বাড়ির আঙিনায় বহু বছর যাবৎ কৃষ্ণচূড়া গাছ চোখে পড়ে। প্রকৃতির সৈন্দর্যবর্ধন করলেও কাঠের ভালো দাম না থাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাটমোহরের মানুষ কৃষ্ণচূড়ার চারা রোপণ করেন না। নার্সারিতে সীমিত চারা তৈরি করা হয়। শখের বশে অল্প সংখ্যক মানুষ কৃষ্ণচূড়ার চারা রোপণ করেন। অনাদর অবহেলায় বেড়ে ওঠে কৃষ্ণচূড়া গাছ। পরিচর্যার খুব একটা প্রয়োজন পড়ে না। তবে চাটমোহরের কিছু সামাজিক সংগঠনের তরুণ-তরুণীরা চাটমোহর-হান্ডিয়াল সড়কে রোপণ করেছেন কিছু সংখ্যক কৃষ্ণচূড়া গাছ। ফুল ফুটতে শুরু করেছে সে গাছগুলোতে।
উপজেলার দোলং গ্রামের শিক্ষার্থী ফাহমিদা হক হীরা জানান, এপ্রিল মাসে যখন কৃষ্ণচূড়া ফুল ফোটে,সবুজ পাতার আড়াল থেকে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল মাথা বাড়ায় তখন এ দৃশ্য খুবই ভালো লাগে। থোকায় থোকায় ফুটে থাকা কৃষ্ণচূড়া মনে আবেগ জাগায় এবং তা যেন অনুভূতির গভীরে প্রবেশ করে।
পৌর সদরের গৃহবধূ জীবন নেসা জেবা জানান, পথের পাশে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কৃষ্ণচূড়া গাছ বেশি চোখে পড়ে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের একটা আলাদা অপূর্ব সৈন্দর্য রয়েছে।
চাটমোহর টেকনিক্যাল এন্ড বিএম ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মেহেরাব হোসেন সোহান জানান, ফুল ভালবাসার, পবিত্রতার প্রতীক। কৃষ্ণচূড়া ফুল যখন ফোটে তখন প্রকৃতি যেন নতুন রূপে সাজে। লাল টকটকে এবং হলুদাভ কৃষ্ণচূড়া মনকে করে আলোড়িত। তবে বৃক্ষ নিধনের ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে কৃষ্ণচূড়া গাছ। প্রকৃতির সৈন্দর্যবর্ধনে কৃষ্ণচূড়া গাছের জুড়ি মেলা ভার বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন