মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৪, ১০:৪২ পিএম
আপডেট : ০৬ জুন ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

প্রতিবন্ধীদের ভাতার টাকা ‘মেরে খাচ্ছেন’ চেয়ারম্যান

খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ। ছবি : সংগৃহীত
খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ। ছবি : সংগৃহীত

প্রতিবন্ধী ভাতার টাকায় ভাগ বসালেন এক ইউপি চেয়ারম্যান। অফিস খরচ বাবদ অন্তত ২৮ জন ভাতাভোগীর কাছ থেকে ১ হাজার ৬শ করে টাকা কেটে নিয়েছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে।

জানা যায়, চলতি বছরে খেদাপাড়া ইউনিয়নের ১৩৩ জন প্রতিবন্ধীর নাম ভাতার তালিকায় যুক্ত হয়েছে। সম্প্রতি তাদের ব্যাংক হিসাব নম্বরে ১০-১২ হাজার টাকা যুক্ত হয়েছে। বুধবার (৫ জুন) আঙুলের ছাপ দিয়ে বই ও টাকা আনতে পরিষদে যান উপকারভোগীরা। পরিষদের একটি কক্ষে ছাপ নেওয়া ও টাকা দেওয়ার কাজে চারজন লোক নিযুক্ত ছিলেন।

তাদের মধ্যে দুজন ব্যাংক কর্মকর্তা। তারা আঙুলের ছাপ নিয়ে টাকার জন্য পাশের টেবিলে তাদেরই ব্যাংকের নিয়োজিত স্থানীয় প্রতিনিধি সৌরভ বিশ্বাসের কাছে লোকজনকে পাঠান। সৌরভ ব্যাংকের কাজের পাশাপাশি খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে আউটসোর্সিং এ কাজও করেন। তিনি ভাতার বইতে টাকার অঙ্ক তুলে স্বাক্ষর দিয়ে টাকা ভাতাভোগীর হাতে না দিয়ে পাশের টেবিলের পরিষদের এক নারী কর্মীর হাতে দেন। সেখান থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেটে নিয়ে ভাতাভোগীর হাতে ৮ হাজার ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়।

এদিকে, আঙুলের ছাপের নামে টাকা কেটে রাখার ভিডিও ধারণ করেন আমির হোসেন নামে এক যুবক। বিষয়টি টের পেয়ে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহ। একপর্যায়ে ওই যুবক চেয়ারম্যানের কাছে লাঞ্ছিত হন। ঘটনার পরপরই আমির হোসেন মনিরামপুর উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরে মৌখিত অভিযোগ করেন।

উপকারভোগী কাশিপুর গ্রামের এমদাদ হোসেন, সাইদুল ইসলাম ও শিরিনা খাতুন জানান, তাদের বইতে ১০ হাজার ১০০ টাকা তোলা হয়েছে। কিন্তু হাতে পেয়েছেন ৮ হাজার ৫০০ টাকা। বাকি টাকা ওই রুম থেকে কেটে রাখা হয়েছে। কারণ জানতে চাইলে বলেছেন, এই টাকা অফিস খরচ। সবার থেকে একইভাবে টাকা কেটে নিচ্ছিলেন।

আমির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা-মা দুজনের নাম প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে। সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে তাদের হিসাব নম্বরে ১০ হাজার ১০০ টাকা ঢুকেছে। খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে ভাতার বই ও টাকা দেওয়ার খবর পেয়ে বুধবার সকালে পরিষদে টাকা তুলতে যান তারা। দুপুরে আমি পরিষদে যাই। সেখানে গিয়ে শুনতে পাই ব্যাংকের এজেন্টের মাধ্যমে চেয়ারম্যান প্রত্যেক উপকারভোগীর কাছ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেটে রাখছেন। আমি টাকা নেওয়ার ঘটনার ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করতে কক্ষে ঢুকি। টের পেয়ে ওই কক্ষের দায়িত্বরতরা কাজ রেখে দৌড়ে চেয়ারম্যানের কক্ষে যান। এরপর চেয়ারম্যান এসে আমাকে লাঞ্ছিত করেন। আমি সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছি।

খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহ বলেন, ভাতা দেওয়ার সময় আমি পরিষদের অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম। কারা টাকা কেটে নিচ্ছিল আমার জানা নেই। আমির হোসেন নামে ছেলেটি আমাকে না জানিয়ে ভিডিও করছিল। তাই নিষেধ করেছি মাত্র।

মনিরামপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকায় নতুনভাবে যুক্তদের ভাতার বই পরিষদের চেয়ারম্যান অফিস থেকে নিয়ে গেছেন। ভাতা দেওয়ার সময় টাকা কেটে রাখা হয়েছে শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গাজীপুরে বাসচাপায় যুবক নিহত

দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঠে থাকবে বিএনপি : আজাদ

সাড়ে ৩ কোটি টাকার চাল নিয়ে লাপাত্তা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা

সাতক্ষীরায় ৯ মাস বেতন পাচ্ছেন না ৪২০ শিক্ষক

সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার

গাজীপুরে শান্তিপূর্ণভাবে চলছে পোশাক কারখানা

বৃষ্টি আর কত দিন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অফিস

ইসরায়েলি হামলায় সিরিয়া-লেবানন সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

দুপুরের মধ্যে ঝড় হতে পারে যেসব অঞ্চলে

আরেক দেশ থেকে ইসরায়েলে হামলায় ২ সেনা নিহত, আহত ২৪

১০

বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে জবির স্লোগান ‘বিপ্লবে বলীয়ান নির্ভীক জবিয়ান’

১১

শিক্ষক দিবসে যেসব কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে

১২

হত্যা মামলায় রসিকের সাবেক কাউন্সিলর মিলন গ্রেপ্তার

১৩

বৈরুত বিমানবন্দরের পাশেই ইসরায়েলি তাণ্ডব

১৪

সিলেটে রায়হান হত্যা মামলায় ২ যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

১৫

৫ অক্টোবর : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১৬

রোহিঙ্গা সংকট একটি তাজা টাইম বোমা : ড. ইউনূস

১৭

বন্যার পানিতে মায়ের লাশের সঙ্গে ভেসে এল শিশু

১৮

লেবাননের যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষ, পিছু হঠল ইসরায়েলি বাহিনী

১৯

সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর জানাজা কখন-কোথায়?

২০
X