দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অলৌকিক এক আগুন এলাকাজুড়ে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার (৪ জুন) রাতে পৌর শহরের পশ্চিম নিউ কলোনি ধুপিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত আগুনের কোনো উৎস পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, ওই এলাকার ভ্যানচালক নুর ইসলাম নুরুর স্ত্রী সাবিয়া খাতুন, দুই ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে তার সাত সদস্যের পরিবার। সবাই মিলে একই বাড়িতে থাকেন। অবসর সময় স্ত্রীর সঙ্গে তাদের ছোট্ট খাবারের হোটেলে সময় দেন নুরু। গত তিন দিন আগে হঠাৎ দিনের বেলা তার বাড়ির টিনে অলৌকিক এক আগুন দেখতে পান। পরে তা নেভাতে সক্ষম হন। এর পর থেকে গত দুই দিনে খাট, সেলাই মেশিন, ঘরের উঠান, প্লাস্টিকের বস্তাসহ বাড়ির বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৩০ বারের বেশি আগুনের দেখা মেলে। এ ঘটনায় আগুন আতংকে ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে বাড়ির কাপড়, তোশক, বালিসসহ বিভিন্ন মালামাল পার্শ্ববর্তী রায়েয়া খাতুনের বাড়িতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও ঘটে বিপত্তি। বাড়ির এ মালামাল নিয়ে ওই বাড়িতে যাওয়া হলে কিছুক্ষণ পর সেখানেও আগুন দেখা দেয়। শুধু তাই নয়, এ আগুন বাড়ি ছেড়ে সর্বশেষ নুরুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হোটেলেও দেখা যায়।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা কথা ছড়িয়ে পড়লে দূর-দূরান্ত থেকে আসতে শুরু করে উৎসুক জনতা। তবে, এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। রাত ১০টার দিকে আবারও বাড়িতে একটি ভেজা গামছায় আগুন লাগার ঘটনা দেখতে পান পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে পার্বতীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নুরুর ছেলে ওসমান গনি সিয়াম (২৪) জানান, কয়েকদিন থেকে এ ঘটনা ঘটে চললেও সন্ধ্যার পর এর মাত্রা বেড়ে যায়। ছোট বোন শান্তা আকতার (১৭) ঘটনার পর থেকে অস্বাভাবিক আচরণ করছে। আগুন লাগার আগেই সে বলে দিচ্ছে। মুহূর্তেই সেখানে গিয়ে আগুন দেখতে পাচ্ছি আমরাসহ স্থানীয়রা। তবে, এর কারণ এখনো জানা যায়নি।
খবর পেয়ে দেখতে আসা স্থানীয় হামিদুর রহমান, হাফিজুল ইসলাম, শাকিল হোসেন বলেন- অলৌকিক আগুন লাগার ঘটনা শুনে দেখতে এসেছি। তবে ভেজা কাপড়ে আগুন লাগার ঘটনা সবাইকে চমকে দিচ্ছে। এর সঠিক কারণ না জানলেও অনেকে এ ঘটনাকে কুফরি কালাম জাতীয় কর্মকাণ্ড হিসেবে ধারণা করছেন।
পার্বতীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে এসেছি। তবে, কী কারণে এমনটি হচ্ছে তা বলা যাচ্ছে না। দুর্ঘটনা রোধে সবাইকে সচেতন থাকার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি মজুত করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমরা এর সূত্রপাত বের করতে কাজ করছি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মন্তব্য করুন