মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। ঐতিহ্যবাহী এ স্কুলটি শিক্ষার গুণে অনেক নাম কুড়িয়েছে। কিন্তু বর্তমান প্রধান শিক্ষক নিয়মনীতি না মেনে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি স্কুলের গাছ কেটে সাবাড় করে ফেলেছেন তিনি। সেগুন, ঔষধি অর্জুনসহ মূল্যবান গাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অয়ন চৌধুরীর বিরুদ্ধে।
স্কুলের অর্ধশত বছরেরও অধিক পুরোনো গাছ কেটে বিক্রি করেছেন তিনি। যার বাজারমূল্য আনুমানিক ১৪/১৫ লাখ টাকা। কোনো ধরনের দরপত্র ও প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই সুকৌশলে গাছ কেটে ফেলেছেন। অহেতুক ঝড়ের অজুহাতে গাছগুলো কেটে ডালপালা নামমাত্র রেখেছেন স্কুল প্রাঙ্গণে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নামকরা ভিক্টোরিয়া হাইস্কুলের মেহগনি, আকাশি, সেগুন, অর্জুন, ইউকালেক্টর, বেলজিয়াম এসব রোপণ করা হয় প্রায় অর্ধশত বছর আগে। গাছগুলো বেশ বড় আকৃতির হওয়ায় নজরে আসে প্রধান শিক্ষক অয়ন চৌধুরীর।
তিনি বলেন, বন বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই প্রতিনিয়ত গাছগুলো কেটে বিক্রি করছেন তিনি। কৌশলে ৭/১০টি করে প্রায় ২০/২৫টি গাছ কাটার সত্যতা পাওয়া গেছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকারও বেশি। ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে অজুহাতে কয়েকটি গাছ স্কুলে রাখলেও বাকি গাছগুলো অন্যত্র বিক্রি করেছেন প্রধান শিক্ষক।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ওই স্কুলের এক শিক্ষক জানান, স্বেচ্ছাচারিতার চরমে পৌঁছে গেছে। অভিযোগ বলে শেষ হওয়ার নয়। তবে ভয়ে এসব বিষয়ে কথা বলার কেউ নেই। আমি বলছি জানতে পারলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। প্রধান শিক্ষকের অনেক উপরে হাত আছে, ম্যানেজ করে নিবে সবকিছু।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক অয়ন চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালে কিছু গাছ উপড়ে পড়ে ও ঝড়-তুফানের কারণে গাছ ভেঙে পড়ে ক্লাস রুমের ওপর। তাই আমি ওই গাছগুলো কেটে ফেলি। তবে প্রশ্নের একপর্যায়ে প্রশাসন বা বন বিভাগ অবগত আছেন কি না তার উত্তরে অনুমতি নেই বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
শ্রীমঙ্গল বনবিভাগ রেঞ্জের সহকারী কর্মকর্তা মো. আলী তাহের বলেন, এ স্কুলে গাছ কাটার বিষয়ে কোনো চিঠি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে আসেনি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আবু তালেব বলেন, আমাদের শ্রীমঙ্গলের ঐতিহ্যবাহী স্কুল ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু গাছ প্রধান শিক্ষক কেটেছে এরকম অভিযোগ আমি পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার পর আমি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলেছি বিষয়টি তদন্ত করে আমাকে জানানোর জন্য।
তিনি বলেন, আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যেই উনি আমাকে তদন্তের রিপোর্ট দেবেন। রিপোর্ট পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে আমরা আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
মন্তব্য করুন