বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই চাষাবাদ হচ্ছে বিদেশি ফল-ফুলের। বিশেষ করে শৌখিন চাষিরা ছাদবাগান কিংবা নিজস্ব জমিতে ভিনদেশি ফল-ফুল-মসলা জাতীয় গাছের পরীক্ষামূলক চাষ করছেন। এতে অনেকে আশানুরূপ সফলতাও পাচ্ছেন। তেমনিভাবেই উন্নত ব্রুনাই কিং জাতের আমের পরীক্ষামূলক চাষ করে সফলতা পেয়েছে যশোরের নতুন খয়েরতলা হর্টিকালচার সেন্টার।
দীর্ঘ চার বছর পরে একটি গাছেই ফলন এসেছে ৩০-৩৫টি আম। যার প্রতিটির ওজন ৩-৫ কেজি পর্যন্ত। দেশীয় অন্যান্য আমের সঙ্গে ব্রুনাই কিং জাতের এই আমের গড়ন সম্পূর্ণ ভিন্ন। যার কারণে বিরাট আকৃতির কারণেই স্থানীয়রা এই আমের নাম দিয়েছেন ‘বালিশ আম’।
হর্টিকালচার সেন্টার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পার্শ্ববর্তী জেলা মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালী গ্রামের নার্সারি মালিক আতিয়ার রহমান তার নিকটআত্মীয়ের মাধ্যমে ব্রুনাইয়ের রাজকীয় বাগানের এ আমটি বাংলাদেশে আনেন। এরপর আতিয়ার রহমানের নিজ নার্সারিতে এ আমের চারা তৈরি করেন। চার বছর আগে আতিয়ার রহমানের কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে যশোর হর্টিকালচার সেন্টারে একটি মাতৃ গাছ তৈরি করা হয়েছে। প্রথম দিকে পরিচর্যাগত কারণে ফল না আসলেও এ বছর গাছটিতে প্রায় ৩০-৩৫টি আম ধরেছে।
যশোর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক দীপঙ্কর দাস বলেন, চার বছর আগে এই ব্রুনাই কিং জাতের আম গাছের চারাটি রোপণ করা হয়। প্রথমদিকে পরিচর্যাগত সমস্যার কারণে ফল পাওয়া যায়নি। তবে এ বছর গাছটিতে প্রায় ৩৫টি আম ধরেছে। গাছটির সবথেকে বড় আমটির ওজন প্রায় ৫ কেজি। যেটি দেশের সব থেকে বড় আম। অন্য আমের মতো একই সময়ে এ আমেরও মুকুল আসে। তবে পাকে দেরিতে এবং স্বাদে দেশীয় ফজলি আমের মতো।
হর্টিকালচার সেন্টারের কর্মচারী মোহাম্মদ ওলিয়র রহমান বলেন, চাষি পর্যায়ে এ আম প্রসারে কলম তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে সরাসরি দেখতে আসছেন। অনেকে আবার দেখতে এসে গাছের কলম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আম গাছটি রোপণের পর থেকে কৃষিবিদদের পরামর্শ মতো আমরা পরিচর্যা করে এসেছি। পরিচর্যা সাধারণ উন্নত জাতের আমের কলমের মতোই। তবে, এ বছর প্রথমেই এত বড় আকৃতির এত ফল ধরেছে দেখে মনে অনেক প্রশান্তি পেয়েছি।
ঝিকরগাছার গদখালি থেকে আসা ফিরোজ কবীর বলেন, আমাদের গ্রাম গদখালীতে এখন বিদেশি ফুলের চাষাবাদ হচ্ছে। তেমনি, এই বিদেশি আমের কথা জানতে পেরে আগ্রহ নিয়ে দেখতে আসলাম। কয়েকটা কলম ক্রয় করেছি। আশা করছি, কলম বাঁচাতে পারলে আমার পরিচর্যায় একদিন আমার গাছেও ফল আসবে।