ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ১১ বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণ এবং হত্যার অভিযোগে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ পাহারায় জেলহাজতে পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে তাকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০ আইনের ১৯(৪) (খ) ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৩০২ ধারায় আরও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাসেল সিকদার (২৩) বোয়ালমারী থানার ইছাডাঙ্গা গ্রামের মনোয়ার সিকদারের ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, শিশুটি আসামি রাসেল সিকদারের চাচাতো বোন হতো। শিশুটি তখন পাশের এইট বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তারা একে অন্যের প্রতিবেশী ছিল। ঘটনার দিন ২০২২ সালের ২২ আগস্ট সন্ধ্যায় শিশুটিকে রাসেলদের বাড়ি থেকে পাওনা দেড়শ টাকা নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল। রাসেল তখন বাড়িতে একাই ছিল। শিশুটি রাসেলের বাড়িতে টাকা আনতে গেলে রাসেল পাশের গোসল খানায় নিয়ে গিয়ে শিশুটিকে প্রথমে ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষণের কথা জানাজানি হওয়ার ভয়ে শিশুটিকে হাত পা বেঁধে, গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে।
পরবর্তীতে পরিবার শিশুটিকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি ও মসজিদে মাইকিং করতে থাকে এবং ৯৯৯ কল করে পুলিশকে খবর দেয়। সে সময় রাসেল পালানোর চেষ্টা করলে তাকে কৌশলে আটক করা হয়। পরে তার দেখানো মতে গোসল খানার ভেতর শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত শিশুর পিতা মো. মোক্তার হোসেন বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় একটি ধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাসেলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করলে রাসেল হত্যার বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। বোয়ালমারী থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. আজাদ হোসেন ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিলে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) স্বপন কুমার পাল বলেন, এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করে। এ রায়ের ফলে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।
মন্তব্য করুন