জয়পুরহাট জেলার হাট বাজারে আলুর ছোট বড় বিভিন্ন প্রকার ভেদে দাম বেড়েছে ১০ টাকা কেজি প্রতি। আলুর দাম বাড়ায় সীমিত আয়ের সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন। বাজারে পাইকারি প্রতি মন (৪০ কেজি) বিভিন্ন জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৬০০ টাকা থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা মন দরে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, হাট বাজারে আলুর আমদানি কমে যাওয়ায় আলুর দাম বেড়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু ৪৫ টাকা থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগেও ৩৫ টাকা থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হয়েছে। আলু মৌসুমের শুরু থেকেই হাট বাজারে প্রতি মন আলু বিক্রি হয়েছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা মন দরে। আলু চাষ করে কৃষকরা আশাতীত লাভ পেয়েছে। বর্তমান বাজারে প্রতি মনে দাম বেড়েছে ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা করে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) শহরের নতুনহাটে আলু বিক্রি করতে আসা কৃষক ও কিনতে আসা ব্যবসায়িদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, হাটে আলুর আমদানি খুব কম। চাহিদা থাকায় আলুর দাম বেড়েছে। হিমাগারের আলু বিক্রি এখনো শুরু না হওয়ায় আলুর দাম বেশি।
কোমরগ্রামের আলু ব্যবসায়ী দিলবর হোসেন বলেন, হাটে আমদানি না থাকায় তারা চাহিদামতো আলু কিনতে পারছেন না। ব্যাপারি বেশি, বাজারে আলু কম। উৎপাদিত আলু হিমাগারে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও কৃষকরা। কিছু কৃষক পরিবার সামান্য করে বাড়িতে রাখা আলু বিক্রি করছেন।
কোমড় গ্রামের কৃষক আবুজার রহমান বলেন, জমি থেকে আলু তুলে ওই সময় ভাল দাম পাওয়ায় কৃষক আলু বিক্রি করেছে। আবার ২০-৩০ বস্তা করে স্টোরে রেখেছে তারা। অধিকাংশ কৃষকের ঘরে বিক্রি করার মতো আলু নেই। এবার আলু উৎপাদন খরচও বেশি ছিল।
ধারকি গ্রামের রিকশাচালক বেলাল আকন্দ, কৃষিশ্রমিক শাহিন বলেন, আলু গরিবের প্রধান তরকারি। সেই আলু ৫০ টাকা কেজি। অন্যান্য তরকারিসহ সংসারের আরও খরচতো আছে। এক কেজি আলুর দাম চালেরও সে দাম।দিন চলবে কি ভাবে এ প্রশ্ন খেটে খাওয়া সাধরণ মানুষের।
সবজি ও খুচরা আলু বিক্রেতা আল-আমিন, আব্দুল হাকিম, খায়রুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে স্টিক, কাটিনাল আলু প্রকার ভেদে ৪০-৪৫ টাকা ও পাকরি (গুটি আলু) ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকা আর নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার ভান্ডরপুরী আলু ৬০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচ উপজেলায় ৩৮ হাজার ৮১৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়। এ পরিমাণ জমি থেকে আলু উৎপাদন হয়েছে ৯ লাখ ২০ হাজার ৭৮০ মেট্রিক টন।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রাহেলা পারভিন বলেন, কৃষক দাম ভালো পেয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার আলু হিমাগারের বেশি আলু মজুদ রয়েছে। হিমাগারের আলু বিক্রি শুরু হলে দাম কিছুটা কমে যাবে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে জেলা বিপণন ও জেলা প্রশাসন ও হিমাগারের মালিকদের নিয়ে যৌথ মিটিং হবে।
মন্তব্য করুন